কুয়াকাটা সাগরকন্যা ডেস্ক রিপোর্ট॥
করোনা ভাইরাসের ( কোভিড ১৯) দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ ঠেকাতে আজ সোমবার থেকে সরকারি নির্দেশে সারাদেশব্যাপী চলছে লকডাউন । ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন কার্যকর করতে মাঠে রয়েছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ-
কলাপাড়া (পটুয়াখালী):
লকডাউনের প্রথমদিনে কলাপাড়ায় পৌরশহরে দোকানপাট বন্ধ ছিল। কুয়াকাটা এবং কলাপাড়া থেকে চলাচলকারী দূরপাল্লার সকল ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই দৃশ্য ছিল উপজেলার পায়রাবন্দর, কুয়াকাটা, মহিপুর এবং আলীপুরের। তবে বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারগুলোতে চায়ের বহু দোকান খোলা ছিল। জনপ্রতিনিধিরা উদাসীন থাকায় এমন অবস্থা দেখা গেছে। কলাপাড়ায় মাছের এবং কাঁচা বাজার উন্মুক্ত স্থানে না নেয়ায় মানুষ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে কেনাকাটা করেছে। লকডাউনের নির্দেশনা অনেকক্ষেত্রে মাইকিংএ সীমাবদ্ধ ছিল। তবে পুলিশ এবং ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানও পরিচালিত হয়েছে। ভোক্তা অধিকার আইনে এক রেস্তরা মালিককে ৩৫ হাজার টাকা, হোটেলের সীটে বসিয়ে খাওয়ানোয় পাঁচ শ’ টাকা জরিমানা এবং মাস্ক না পড়ায় সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল এসব দন্ড দিয়েছেন। এদিকে সোমবারে কলাপাড়ায় আরও নতুন দুই জন করোনা শণাক্ত হয়েছেন। এনিয়ে কলাপাড়ায় দ্বিতীয় দফায় ১৮ জন করেনা করোনা শণাক্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন দুই জন। তবে লকডাউনে নিত্য আয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। শ্রমজীবী এসব মানুষ খাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন।
নেছারাবাদ (পিরোজপুর):
সারা দেশের ন্যায় নেছারাবাদে ৭দিনের লকডাউন শুরু হয়েছে। সোমবার প্রথম দিনে ইউএনও মো. মোশারেফ হোসেন, পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম কবির, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বশির গাজী ও ওসি আবীর মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে পৌরশহরে, মিয়ারহাট ও ইন্দুরহাটে অভিযান চালানো হয়। এসময় ইউএনও মাইকে সকলকে সচেতন করে আইন মেনে চলার জন্য আহ্বান জানান। সরকারী বিজ্ঞপিতে নির্ধারিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যসব দোকান না খোলাসহ সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক ইন্দুরহাট মিয়ারহাটের অভিযানে যোগ দেন। এছাড়াও সবগুলো প্রবেশ দারে পুলিশী চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে।
দুমকি (পটুয়াখালী):
দ্বিতীয় ধাপে করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯) সংক্রমণ রোধে সারাদেশে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষনার প্রথম দিনে পটুয়াখালীর দুমকিতে ঢিলেঢালা ভাবে লকডাউন হয়েছে। উপজেলা শহরের ঔষধের দোকান, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মুদী, মনোহরি ও কাঁচাবাজার ব্যতিত প্রায় সবগুলো দোকানপাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষনা থাকলেও তা পুরোপুরি পালন করেননি ব্যবসায়িরা। প্রধান ফটক বন্ধ থাকলেও বেশীর ভাগ দোকান পাটের পকেট দরজায় বেচা-কেনা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনচলাচল স্বাভাবিক ছিল। সড়ক ও নৌ-পথে দূর-পাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ছোট ছোট যানবাহন-অটোবাইক, মাইক্রো, মাহিন্দ্রা ও মোটর সাইকেলে যাত্রী পরিবহন করেছে।
গলাচিপা (পটুয়াখালী):
সারাদেশের ন্যায় পটুয়াখালীর গলাচিপায় মানুষের করোনা মুক্ত ও স্বাস্থ্যবিধি পালন করার লক্ষে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ও গলাচিপা থানা পুলিশ বাহীনির যৌথ অভিযানে সোমবার(৫ই এপ্রিল)দিনভর সরকারি নির্দেশে লকডাউন কার্যকর মাঠে নেমেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিষ কুমার এর নেতৃত্বে গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমআর শওকত আনোয়ার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মু. শাহিন শাহ এর উপস্থিতিতে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন ইউনিটের, মার্কেট, কাঁচা বাজার, মাছ বাজারসহ জনসচেতনতার প্রচার অভিযান এবং লকডাউন কার্যকর করার ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। অভিযান চলাকালীন সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. নিজামউদ্দিন মোল্লা, উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএম দেলোয়ার হোসেন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুব হাসান শিবলী,গলাচিপ প্রেসক্লাব সভাপতি সমিত কুমার দত্ত মলয়, সাংবাদিক খালিদ হোসেন মিল্টন ও বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা সহযোগিতা করেন। উল্লেখ্য এই উপজেলার শতকরা ৯০ভাগ মানুষ মাস্ক ব্যাবহার করে এবং সরকারেরে ঘাষিত লকডাউন ও সকল বিধিনিষেধ পালন করে আসছে।
এমআর