আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী উপজেলা চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১২ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত সাত জনকে আমতলী ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুড়িয়ে দিয়েছে ২টি এবং ভাংচুর করেছে ৩টি মোটর সাইকেল। ঘটনা ঘটেছে সোমবার রাতে ইউনিয়নের পাতাকাটা এলাকায়। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ ৫ টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করেছে।
জানাগেছে, উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খানের মামাতো ভাই উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ মাহবুব ইসলাম ও হত্যা মামলার আসামী মহিবুল্লাহ কিরনসহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাতাকাটা বাঁধের উপরে অবস্থান নেয়। তারা ওই বাঁধে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মহসিনের কর্মী ব্যবসায়ী মোঃ শানু হাওলাদারের উপর হামলা চালায় এবং তার দোকান ভাংচুর করে। এরপর ওই বাঁধে চলাচলরত স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ধরে ধরে মাহবুব ইসলাম, মহিউদ্দিন কিরন, জব্বার গাজী, খোকন হাওলাদার, তোহাসহ ১০-১২ জনে দেশীয় ধারালো অন্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও হাতুরী দিয়ে পিটিয়ে মারধর শুরু কওে এমন অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর। খবর পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারধর ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় আওয়ামীলীগ কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর দুইটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে এবং ৩ টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। এতে উভয় পক্ষের ১২ কর্মী আহত হয়। ওই রাতেই গুরুতর আহত শানু হাওলাদার (৫০), শহীদুল মল্লিক (৪৫), জসিম গাজী (৪০), জাকারিয়া (২৬), লোকমান সিকদার (৪৫), নাসির হাওলাদার (৫০) ও আব্দুস সালামকে (৩০) আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিসক দিলীপ রায় শহীদুল মল্লিক, জসিম গাজী, জাকারিয়া ও আব্দুস সালামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং ২ টি পোড়ানো এবং ৩ টি ভাংচুর করা মোটর সাইকেল উদ্ধার করে। এদিকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অভিযোগ করেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা তার তিনটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে এবং কয়েকজন কর্মীকে মারধর করেছে।
আহত শানু হাওলাদার বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহবুব ইসলাম, হত্যা মামলার আসামী মহিউদ্দিন কিরন, তোহা ও জব্বার গাজীসহ ১০-১২ জনে আমার দোকানপাট ভাংচুর করে আমাকে মারধর করেছে। তিনি আরো বলেন, আমার দোকানে থাকা ৪৫ হাজার টাকা মাহবুব লুট করে নিয়েছে।
আহত লোকমান বলেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থী আখতারুজ্জামান বাদল খানের মামাতো ভাই মাহবুব ও হত্যা মামলার আসামী মহিউদ্দিন কিরনের নেতৃত্বে পাতাকাটা বাঁধের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের ধরে ধরে মারধর করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক লোক আহত হয়েছে।
আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খান মুঠো ফোনে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা আমার তিনটি গাড়ী পুড়িয়ে দিয়েছে এবং লোকজনকে মারধর করেছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মহসিন হাওলাদার বলেন, পরিকল্পিতভাবে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর মামাতো ভাই উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ মাহবুব ও হত্যা মামলার আসামী মহিউদ্দিন কিরনের নেতৃত্বে আমার লোকজনকে মারধর এবং দোকানপাট ভাংচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, আমার দুইটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে এবং তিনটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছি এবং ওই স্থান থেকে দুইটি পোড়ানো এবং তিনটি ভাংচুর করা মোটর সাইকেল উদ্ধার করেছি।
এমএইচকে/এমআর