আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ও আওয়ামীলীগ প্রার্থী সোহেলী পারভীন মালার কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ২১ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ১৫ জনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত ৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার সোমবাড়িয়া বাজরে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে দাবী করেন ওসি শাহ আলম হাওলাদার।
জানাগেছে, উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিক পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আবুল কালাম আজাদ তার অর্ধ-শতাধীক কর্মী-সমর্থক নিয়ে শ্লোগান দিয়ে মোটর সাইকেলে সোমবাড়িয়া বাজারে যায়। খবর পেয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সোহেলী পারভীন মালার কর্মী নয়া তালুকদার, শহীদুল ইসলাম তালুকদার ও কাওসার তালুকদারের নেতৃত্বে ৩০-৪০ কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের উপর এলোপাতারি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় এমন দাবী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা তাদের প্রতিহতের চেষ্টা করে। এতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আধা ঘন্টাব্যাপী চলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। মুহুর্তের মধ্যে ওই বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষে দু’পক্ষের ২১ জন আহত হয়। ওইদিন রাতে গুরুতর আহত বশির তালুকদার (৪৫), শাহীন তালুকদার সোহেল (৩০), জসিম তালুকদার (৪৮), নাশির তালুকদার (৪০) ও সেলিম তালুকদার (৪৫), তাওহিদ (৩৫), শাহিন (৩০), শহীদুল ইসলাম (৪৫), ইব্রাহিম খান (৩৫), দুলাল (৪০), কাওসার (৪৭),সুজন (২১), আবুল কালাম আজাদ (৪৫),বাশার আকন (৪২) ও সাওনকে (১৮) আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোঃ মোশের্^দ আলম সংঙ্কটজনক অবস্থায় বশির তালুকদার (৪৫), শাহীন তালুকদার সোহেল (৩০), জসিম তালুকদার (৪৮), নাশির তালুকদার (৪০), তাওহিদ (৩৫), শাহিন (৩০), শহীদুল ইসলাম (৪৫) ও সেলিম তালুকদাকে (৪৫) উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছে। অপর আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। খবর পেয়ে আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদারের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এদিকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সোহেলী পারভীন মালা দাবী করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা তার দুটি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে।
মাছ ব্যবসায়ী আহত দুলাল কবিরাজ বলেন, আমি পচাঁকোড়ালিয়া বাজারে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে সোমবাড়িয়া বাজারে পৌছা মাত্রই আমাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আজাদের কর্মী ভেবে নৌকার কর্মীরা মারধর করেছে এবং মোটর সাইকেল ছিনিয়ে নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের কর্মী সমর্থকরা প্রতীক পেয়ে শ্লোগান দিয়ে মোটর সাইকেলে সোমবাড়িয়া বাজারে আসে। ওই সময় আওয়ামীলীগ প্রার্থী সোহেলী পারভীন মালার কর্মীরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা আরো বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ হামলার অনেক আহত হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থী মালার কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমি রক্ষা পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, এতে আমার ১০ জন কর্মী আহত হয়েছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি।
আওয়ামীলীগ প্রার্থী সোহেলী পারভীন মালা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের উপর হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা আমার কর্মীদের উপর হামলা করেছে। তারা সোমবাড়িয়া বাজার ও নতুন বাজারে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর হামলায় আমার ১১ কর্মী আহত হয়েছে।
আমতলী থানা ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর