আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ত্রাণ দেয়ার কথা বলে নারী ইউপি সদস্য হাফসা বেগমের স্বামী মোঃ আবু কালাম হাওলাদার এক নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউপি সদস্য ও তার স্বামীর ভয়ে ধর্ষিতা ও তার পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শুক্রবার রাতে ধর্ষক কালামের শ্যালক সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন ধর্ষিতার স্বামীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন এমন অভিযোগ ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামীর। ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও প্রভাবাশালী ইউপি সদস্যের লোকজনের ভয়ে তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছে না। এ ঘটনার এলাকার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার রাতে আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামে। এলাকাবাসী এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবী করেছেন।
জানাগেছে, উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোসাঃ হাফসা বেগমের স্বামী আবু কালাম হাওলাদার ঘোপখালী গ্রামের এক নারীকে ত্রাণ দেয়ার কথা বলে বুধবার রাতে ওই নারীর বাড়ীতে যায়। ওই সময়ে তার দিনমজুর স্বামী বাড়ীতে ছিল না। এই সুযোগে ওই নারীকে আবু কালাম হাওলাদার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে ওই নারীকে শাসিয়ে দেয় এই ঘটনা কাউকে জানালে তাকে ও তার পরিবারকে মেরে ফেলবে। কিন্তু এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয় নারী ইউপি সদস্যের স্বামী আবু কালাম। নারী ইউপি সদস্যের স্বামী ও তার লোকজনের ভয়ে ওই নারী ও তার পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামী। এদিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা ওই নারী ও তার স্বামীকে আইনী পদক্ষেপ নিতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাদের ভয়ে তারা আইনী পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছে না। এদিকে শুক্রবার রাতে ধর্ষক কালামের শ্যালক মোঃ সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন ধষিতার স্বামীকে তুলে নিয়ে সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর রেখেছেন এমন অভিযোগ করেন ধর্ষিতার স্বামী। ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারছেন না।
ওই নারী মুঠোফোনে বলেন, ত্রাণ দেয়ার কথা বলে নারী ইউপি সদস্য মোসাঃ হাফসা বেগমের স্বামী আবু কালাম হাওলাদার মঙ্গলবার রাতে আমার বাড়ীতে আসে। ওই সময় আমার স্বামী বাড়ীতে ছিল না। এই সুযোগে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি মান ইজ্জতের ভয়ে কাউকে এ বিষয়টি জানাইনি। কিন্তু বুধবার রাতে আবারো এসে আমাকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ সময় আমি ডাক চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, কামাল আমাকে শাসিয়ে যায় এ ঘটনা কাউকে জানালে আমাকে ও আমার পরিবারকে মেরে ফেলবে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার তার ভয়ে বাড়ী ছেড়ে অন্যাত্র অবস্থান করছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী বলেন, শুকবার রাতে কালামের শ্যালক মোঃ সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন আমাকে তুলে নিয়ে জোরপুর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য কালামের পক্ষ নিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল আমাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন যাতে আমি আইনি পদক্ষেপ নিতে না পারি।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আব্দুল খালেক বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ ঘটনা আমতলী থানা পুলিশকে জানিয়েছি।
অভিযুক্ত আবু কালাম হাওলাদার ধর্ষণের ঘটনা এবং ধর্ষিতার স্বামীকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর