দশমিনা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দশমিনা সরকারী আব্দুল রসিদ তালুকদার ডিগ্রী কলেজের মাউশি’র একপত্রের বিরুদ্ধে ইউএনওসহ ৬জনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা ও নিশেধাজ্ঞার প্রায় ১৪মাস পর অবমুক্ত(ভ্যাকেট) হওয়াতে নিজেই পদ হারালেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচেতা দাস।
স্থানীয় ও কলেজ সূত্রে জানা যায়, দশমিনা সরকারি আব্দুর রশিদ তালুকদার ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচেতা দাস সরকারি বিধি বিধান লঙ্ঘন করে দায়িত্ব গ্রহন করায় ২০২০সালের ১৩ফেব্রুয়ারী যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে অপসারিত হন। অপসারিত হওয়ার পূর্বে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ২০১৯সালের ১০অক্টোবরের প্র্রেরত স্বারক পত্রের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচেতা দাস ১০দিন পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া ফেরদৌস ও সংশি¬ষ্ট মন্ত্রানলয়ের সচিব ও মহা-পরিচালকসহ ৬জনকে বিবাদী করে বিজ্ঞ সহকারি জজ আদালত দশমিনা পটুয়াখালীতে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৮২/১৯। মামলায় স্থগিতাদেশে দোতরফা শুনানীয়ান্তে বাদী কতৃক দাবীগুলো মিথ্যা, বানোয়াট ও বিধি বহির্ভুত বলে চলতি বছরের ১০ফেব্রুয়ারী বিজ্ঞ আদালত রায় প্রদান করেন। আদালতের রায়ের কপি চলতি মাসের ১৮তারিখ বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষ স্বস্ব হাতে পেয়েছেন। রায়ে উল্লেখ করা হয় ২০১৮সালের ১০জুন সুচেতা দাস বিধি বহিভূত ভাবে নবম জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষে দায়িত্ব গ্রহন করেন। সুচেতা দাস তার সিনিয়র ৮জন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে সরকারি সুনির্দিষ্ট বিধি লঙ্ঘন করে বানোয়ার প্রতিবেদন তৈরী করেন। উক্ত প্রতিবেদনের সম্মানিত জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মন্ডলীকে বিভিন্ন কুরিচিপূর্ন, ব্যক্তিগত হেয় প্রতিপন্ন মন্তব্য করা হয়েছে, যাহা কোন ভাবেই আইনসিদ্ধ নয়। এছাড়া সুচেতার বিরুদ্ধে সেচ্ছচারিতা, ক্ষমতা অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ ও তছরুপ এবং রেজুলেশন জালিয়াতি করে সহকারি অধ্যাপক পদে পদায়নের বিষয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকা কতৃক ২০২০সালের ২৫ নভেম্বর এর একটি অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে।
এছাড়া ২০২০সালের ৬জানুয়ারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচেতা দাসের বিরুদ্বে ওই কলেজের জৈষ্ঠ্য শিক্ষক মোঃ খলিলুর রহমান ও আবু জাফরসহ একাধিক শিক্ষক লিখিতভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের বরাবরে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৯-২০২০অর্থবছরের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি মেনুয়্যাল ফি ৪লাখ টাকা, বার্ষিক পরীক্ষা ফি ৪লাখ টাকা, এইচ,এস,সি বোর্ড পরীক্ষা ফি ২লাখ টাকা, মার্কশিট-প্রশংসাপত্র বিতরন বাবদ ২লাখ টাকা ও কলেজের শিক্ষক পরিষদের হিসাব থেকে ৬লাখ টাকাসহ মোট ১৬লাখ টাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচেতা দাস আতœসাৎ করেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একটি সুত্রে জানান, আনিত অভিযোগগুলো তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে। ওই সুত্রে আরও জানান, চলতি বছরের ২৮জানুয়ারী কলেজের এক জরুরি সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা সাজু কলেজের সার্বিক বিষয় শুনে হতাশ প্রকাশ করেন। ওই সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, কলেজ পরিচালক ও ইউএনও তানিয়া ফেরদৌসসহ কলেজের শিক্ষক মন্ডলী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা সাজু জানান, মাউশি’র বিধি বিধানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৮২/১৯ মোকদ্দমায় আদালতের নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে সুচেতা দাসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও রিসিভ না করার কারনে তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ওই কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো.খলিলুর রহমান জানান, আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজ পরিচালক( সদ্য যোগদানকারী) মোঃ আল আমিন জানান, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচেতা দাস কর্তৃক মাউশি’র একপত্রের বিরুদ্ধে করা মামলা ও নিষেধাজ্ঞা অবমুক্ত(ভ্যাকেট) হয়েছে এবং পরবর্তী দিক নির্দেশা চেয়ে মাউশির কাছে পত্র দিব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাউশির বরিশালের আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসার মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন মুঠোফোনে জানান, অফিস আছে আর এবিষয় কোন বক্তব্য দিতে পারবোনা।
এসবি/এমআর