মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার চান না বীর মুক্তিযোদ্ধা অলিউল হক!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার চান না বীর মুক্তিযোদ্ধা অলিউল হক!
বৃহস্পতিবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১


মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার চান না বীর মুক্তিযোদ্ধা অলিউল হক!

দুমকি (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

 ৭১ রনাঙ্গনের সন্মুখ যোদ্ধা, পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার প্রবীণ বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা ওয়ালিউল হক মৃত্যুর পর (রাষ্ট্রীয় সম্মান) গার্ড অব অনার প্রত্যাখান করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রেসক্লাব দুমকির সভা কক্ষে আয়োজিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তাঁর এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। তার লিখিত বক্তব্যে এ প্রবীণ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বাঙালী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে ৭১’এ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। ৭৫’র ১৫ আগষ্ট সেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। জাতীয় চার নেতা যারা বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন- ৩রা নভেম্বর জেলখানার অভ্যন্তরে ঘাতকরা তাদের গুলি ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুচিয়ে তাদের নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। তাদের কোথায় কিভাবে দাফন করা হয়েছে তা সবাই জানেন। যেহেতু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, জাতীয় চারনেতাকে রাষ্ট্রীয় সন্মান দেয়া হয়নি, তাই আমার মতো একজন অতি নগন্য ব্যক্তির রাষ্ট্রীয় সন্মান গ্রহনের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, ১৫আগষ্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবাওে নৃশংসভাবে হত্যার পর তাকে গোপালগঞ্জের নিভৃত গ্রামে ৫৭০ সাবান দিনে গোসল করানো এবং মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ জানাজা দিয়ে দাফন করেছে। ৩রা নভেম্বর জেলঅভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে গুলি করে এবং বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। যদিও হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়েছে। এখনও যারা পালাতক আছে তাদের অবিলম্বে দেশে এনে রায় কার্যকর দেখতে পেলে আত্মা শান্তি পেত। এক প্রশ্নের জবাবে, বয়সের ভারে নূহ্য হয়ে পড়া এ বীর মুক্তিযোদ্ধা অলিউল হক বলেন, আমার কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। কোন কিছু পাওয়ার আশা নেই। তবে মৃত্যুর পর যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে সেই গোরেস্থান ও সংলগ্ন মসজিদ খানা উন্নয়ন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, সহায় সম্বলহীন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা অলিউল হকের পৈত্রিক নিবাস উপজেলার জলিশা গ্রামে। মুক্তিযোদ্ধার সরকারি ভাতার ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী,কন্যা ও এক নাতিকে নিয়ে উপজেলা শহরের একটি ভাড়া বাসায় জীবন যাপন করছেন। পৈত্রিক ভিটি থাকলেও বসবাসের উপযুগী ঘর না থাকায় সারাজীবনই কেটেছে ভাড়া বাসায়। জীবন সায়াহ্নে এসে দেশবাসীকে তার মনের শেষ ইচ্ছাটুকু প্রকাশ করেছেন।

এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৭:৩৮ ● ৮৪০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ