গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের চেয়ার-গ্লাস ভাংচুর করে। খবর শুনে ঘটনাস্থল আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ প্রশাসন। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হলেও বিবাদমান ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে যেকোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও হামলার সাথে জড়িত অপরাধীদের বিচারের দাবি জানান, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো। এদিকে গঠনতন্ত্র মোতাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবি করেন জেলা ছাত্র লীগর সভাপতি হাসান সিকদার। জানাগেছে, গত প্রায় ছয় মাস আগে গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এর পর থেকেই নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলতে থাকে। করোনাকালীন সময় হওয়ায় সম্মেলন করে নতুন কমিটি ঘোষণা স্থবির হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জেলা কমিটির সভাপতি মো. হাসান সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত গলাচিপা উপজেলা শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মো. কামরুল ইসলাম সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রনি খানের নামসহ সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ২২ সদস্যের কমিটির নাম লিখিতভাবে ঘোষণা করা হয়।
এর পর থেকেই সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রলীগ কমিটির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হয়ে বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্বেলন শেষে সন্ধ্যার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, স্টিলের আলমারির গ্লাসসহ বিভিন্ন জিনিস ভাংচুর করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মু্িক্তযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো জানান। এর কিছু পরেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো অফিসে আসেন। পরে তিনি বিষয়টি দলীয় নেতাএর আগে ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির উপজেলা শাখার সভাপতি শরীফ আহম্মেদ আসিফ বুধবার বিকেল ৫টায় সিনেমা হল রোডে অবস্থিত তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. হাসান সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ভূঁইয়ার ১০
ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষরিত রাতের আঁধারে অর্থের বিনিময়ে গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি প্রকাশ করেছেন। নতুন কমিটির সভাপতি কামরুল ইসলাম সোহেল ও রনি খান উভয় পরিবারই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এ সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ইসরাত হোসাইন আব্বাস, সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি বাইতুল ইসলাম রক্সি, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ইমন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল ইসলাম শাকিলসহ ৩০-৩৫জন নেতা-কর্মী। এ বিষয়ে সদ্য ঘোষিত ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল ইসলাম সোহেল বলেন, যারা আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর করে তারা কেমন ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে চায়। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আবেদন রাখছি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অফিসে হামলার ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। শুনতে পেয়েছি ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা হওয়ায় সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রলীগের সভাপতি আসিফের নেতৃত্বে গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করা হয়। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছি।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. হাসান সিকদার বলেন, ‘গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ গত প্রায় ছয় মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আসিফ এর আগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক এবং গত কমিটিতে সভাপতি থাকাকালীন সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি। কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় করোনাকালীন সময়ে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু গঠণতন্ত্র মোতাবেক নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়েছে।’আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুর প্রসঙ্গে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ কিছু কর্মীরা আওয়ামী লীগ অফিসের চেয়ার, স্টিলের আলমারির গ্লাস ভাংচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এসডি/এমআর