ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এসে ছাত্রদলের নেতারা বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনের জন্য নয়, সহাবস্থানের জন্য আমরা ক্যাম্পাসে এসেছি।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নেতারা। এ সময় ছাত্রদলে কোনো শিবির নেই বলেও তাঁরা দাবি করেন। ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে ক্যাম্পাসে আসার পথ তৈরি হয়েছে ছাত্রদলের। তবে সহাবস্থানের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সাংবাদিকদের ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান বলেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে আসা শুরু করেছে। তবে এই আসা ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নয়।
রাজীব বলেন, আমরা চাই দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সবার সহযোগিতায় সহাবস্থান নিশ্চিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধরনের পরিবেশ তৈরি হোক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ সময় শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে ছাত্রদল সব সময় সচেষ্ট বলেও দাবি করেন তিনি।
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজীব বলেন, প্রশাসন যেভাবে নির্বাচন করার জন্য চাচ্ছে, সেটিকে ছাত্রদল গণতান্ত্রিক মনে করছে না। এ সময় তিনি ডাকসু নির্বাচনের তফসিল পুনরায় ঘোষণার দাবি জানান। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, ‘ছাত্রদলে কোনো শিবির নেই।’ তবে কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে শিবিরের অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এসেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী ২০/৩০ জন নেতাকর্মী সঙ্গে নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে যান। পরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানও নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও। এ ছাড়া ছাত্র ইউনিয়নসহ কয়েকটি বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে রয়েছেন।
ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে আসা শুরু করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বৈরিতা থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও তাঁদের স্বাগত জানিয়েছেন। দীর্ঘ নয় বছর পর বুধবার সকালে মধুর ক্যান্টিনে পৌঁছান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে আসেন। পরে তাঁদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান যোগ দেন। সর্বশেষ ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিনে এসেছিল ২০১০ সালের ২১ জুন। সেখানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং লন্ডনে অবস্থানরত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে স্লোগান দেন। তখন মধুর ক্যান্টিনে অবস্থানরত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও ছিলেন সক্রিয়। ছাত্রদলের স্লোগানের জবাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। পাল্টাপাল্টি স্লোগানে সরগরম হয়ে ওঠে মধুর ক্যান্টিন। এ ছাড়া ছাত্র ইউনিয়নসহ কয়েক বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রদল, ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বুধবার পরস্পর কুশল বিনিময়ও করেন। এদিন ডাকসু নির্বাচনের তফসিল পুনরায় ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এফএন/এমআর