ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
কাগজ-কলমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বহু পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবে তেমন আশার আলো দেখা যায়নি। তুলনামূলক কম খরচে টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের মহাপরিকল্পনায় কয়লাকে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গুরুত্ব দেয়া হয়। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদেই ওই অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ও মুন্সীগঞ্জে প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের পরিকল্পনা নেয়া হয়। আর পরিকল্পনা মতো এগোতে পারলে সাশ্রয়ী ওই জ্বালানি থেকে এতোদিনে ৩০ শতাংশের মতো বিদ্যুৎ আসতো। কিন্তু ওসব পরিকল্পনা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকায় বর্তমানে কয়লা থেকে মাত্র ৩ শতাংশ বিদ্যুৎ আসছে। যার জোগান দিচ্ছে এক যুগেরও বেশি সময় আগে নির্মিত বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমান সরকারের প্রথম দুই মেয়াদে কয়লাভিত্তিক কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসেনি। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিভাগ সরকারের নতুন মেয়াদে কয়লাভিত্তিক বৃহৎ প্রকল্পগুলোর গতি বাড়াতে চাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী সরকারের বর্তমান মেয়াদেই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে পায়রা, রামপাল ও মাতারবাড়ির বিদ্যুৎ। ওই লক্ষ্যে কাজের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি কয়লা আমদানির অবকাঠামোর দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে বিগত ১০ বছরে আশা জাগানিয়া বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত কয়লাভিত্তিক বড় কোন বিদ্যুৎকেন্দ্র। উৎপাদনে আসেনি। যে কারণে চাহিদা মেটাতে বেশি উৎপাদন ব্যয়ের তেলভিত্তিক বিদ্যুতেরর দিকেই দিন দিন ঝুঁঁকতে হয়েছে। তবে চলতি বছর থেকে কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ধীরে ধীরে উৎপাদন শুরু করলে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর থেকে নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে। বর্তমানে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক ৩ বৃহৎ কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা পায়রার প্রথম ইউনিট চলতি বছরের আগস্টে চালুর কথা রয়েছে। আর তুলনামূলক পিছিয়ে আছে আলোচিত রামপাল ও মাতারবাড়ির কাজ। বর্তমান সরকারের নতুন মেয়াদে সব প্রকল্পেই গতি আসবে। পাশাপাশি পায়রা, মাতারবাড়ি ও মহেশখালী হাবে শুরু হবে আরো কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন জানান, পায়রায় ৫ থেকে ৬ হাজার মেগাওয়াটের বড় হাব হবে। মাতারবাড়িতে ৪ থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াটের হবে। মহেশখালীতে ১০ হাজার মেগাওয়াটের হাব হবে।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, কোল বেজ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো নিয়ে যতো দ্রুত বড় প্রকল্পে যাওয়া যাবে, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে দেশ ততো সুবিধাজনক অবস্থায় পৌঁছবে। ২০২২ সালের মধ্যেই বড় কিছু প্রকল্প চলে আসবে।
এফএন/এমআর