তজুমদ্দিন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
“আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” এই স্লোগানকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার ১৮টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার।
জানা যায়, তজুমদ্দিন উপজেলার দুইটি ইউনিয়নে এসব ঘর তৈরির কাজ চলছে। ঘরগুলোর নির্মাণ কাজে সর্বদা তদারকি ও খোঁজখবর রাখছেন ভোলা-০৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব কুমার হাজরা। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপের ১৮ টি ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২ এর আওতায় দুইকক্ষ বিশিষ্ট এসব সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। যার প্রতিটি ঘরের জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রতিটি বাসগৃহে দুটি কক্ষ, সংযুক্ত রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা রয়েছে। সুবিদাভোগীরা তাদের স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি।
মুজিববর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না”- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আগামী ২৩ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ শনিবার, সকাল ১০.৩০ টায় ৬৯ হাজার ৯শ ৪ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করবেন। একই দিনে তজুমদ্দিন উপজেলার ১৮ জন উপকারভোগী পরিবারকে দুই শতাংশ জমির দলিলাদিসহ নতুন ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন ঘরগুলোতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার জন্য নতুন মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে।
রিনা বেগম নামে একজন উপকারভোগী জানান, এতদিন বেড়িবাঁধে অনেক কষ্ট করে থাকছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নতুন ঘর পাচ্ছি, খুব আনন্দ লাগছে। আমাগো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আমরা সারা জীবন দোয়া করবো।
রিনা বেগমের প্রতিবেশী ছাবিনা নামের একজন এসব ঘর নির্মাণের কার্যক্রম কাছ থেকে দেখে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, কেউ নিজের জমিতে নিজের টাকায় নিজের ঘর তৈরী করলেও এত অল্প সময়ে এমন সুন্দর ঘর নির্মাণ করতে পারত না।
শম্ভুপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ফরিদ জানান, আমার নির্বাচনী এলাকা শম্ভুপুরে ১ম ধাপে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য মানসম্মত নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ১৩টি দুর্যোগ সহনীয় টেকসই বাসগৃহ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। মুজিববর্ষে আমার ইউনিয়নে যেন কোনো ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে আমি সে দিকে দৃষ্টি রেখে এমপি মহোদয় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বিষয়ে অবগত করেছি।
তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব কুমার হাজরা জানান, তজুমদ্দিন উপজেলায় মোট ১৮টি ঘর মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রদান করা হবে। এর মধ্যে আমরা এ পর্যায়ে ১৮ টি ঘর বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে যার কাজ শেষ হয়েছে। তিনি আরও জানান, ভূমিহীন গৃহহীন এসব মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে পারাটা এক সৌভাগ্যের ব্যাপার। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দর্শনকে বুকে ধারণ করে সর্বাত্মক নিষ্ঠার সাথে এসব গৃহ নির্মাণের কাজে নিয়োজিত ছিলাম। তজুমদ্দিন উপজেলার এসব হতদরিদ্র জনগণের জন্য সরকারের সকল সাহায্য ও উপহার নির্মোহভাবে প্রদানের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ এ কর্মকর্তা।
ভোলা-০৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন জানান, আমার নির্বাচনী এলাকা লালমোহন ও তজুমদ্দিনে কোন মানুষ গৃহহীন থাকবেনা। প্রত্যেক গৃহহীনদের কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আমি পৌঁছে দিবো। এসকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এসময় আশ্রয়ন প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত হতদরিদ্র অসহায় পরিবারগুলো উল্লসিত ও আনন্দিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আরএস/এমআর