দশমিনা(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার পর্চা ম্যাপের শতাধিক খাল দখল ভরাটে এখন ফসলি ক্ষেত। ভূমিদস্যুদের লোলুপ দৃষ্টি আর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে পানি চলাচল ও পয়নিষ্কাশনের মাধ্যম খালগুলো অস্তিত্ব হারিয়েছে।
স্থানীয় শালিস বৈঠকে ব্যবহৃত সিএস ম্যাপে উপজেলায় প্রায় দেড়শতাধিক খালের খর¯্রােত থাকলেও বাস্ততে ভূমিখেকোদের খপ্পরে জলের গতি স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছে। খালের স্থালে শোভা পাচ্ছে ক্ষেতে ফসল আর পুকুর করে মাছ চাষাবাদ। এসব খাল দিয়ে সাগরের পলি বয়ে আসত আর বাড়াতো ফসলি জমির উর্বরতা ।
ভুক্তভোগী কৃষক ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঁশবাড়িয়া তেঁতুলিয়া নদী ও শাখা খালে ¯্রােতে আসা পলিতে উর্বর হতো। বুড়াগৌরাঙ্গ নদ ও শাখা খালের পলি পরতো দশমিনা, রণগোপালদী ও চরবোরহানের গ্রামগুলোর ফসলি জমিতে। ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভূমিদস্যুরা নামে-বেনামে খাল বন্দোবস্ত নিয়েছেন। এছাড়া অপরিকল্পিত বাঁধ ও কালভার্ট নির্মাণ করায় খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষা হলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। আর শুকনো মৌসুমে দেখা দেয় তীব্র পানি সংকট। জলাবদ্ধতা ও পানি সংকটে ফসল ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা পরিষদ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মধ্যের খালটি আজ ব্যস্ততম আবাসিক এলাকা ও সরকারি দপ্তরের কার্যালয়গুলো শোভা বর্ধণ করছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে হেটে কেউ জানবেনা এটা একসয়ময়ে ছয়ঘর খাল। লক্ষ্মীপুর গ্রামের জমিদার নিবারন রায়ের নামের খালটি ১০-১৫ হাত পানি থাকা অবস্থায় বন্দোবস্ত দিয়েছে ভূমি অফিস। বন্দোবস্ত প্রাপ্তরা খালটি ভরাট করে বোরো ধান চাষাবাদ করছেন। এই খাল দিয়ে প্রায় ৩ হাজার একর জমির পানি উঠানামা করত। উপজেলার দশমিনা সদর ইউপির পশ্চিম লক্ষ্মীপুর খাল, আবুতারা খাল, গাজীপুরা খাল, গয়নাঘাট খাল, পূর্ব লক্ষ্মীপুর বাবুর খাল, আলীপুর ইউপির কেয়ার খাল, ইঞ্জিঃ নারায়ণ খাল, শিংবাড়িয়া খাল, গুলবুনিয়ার খাল, রণগোপালদী ইউপির কাটাখাল, নাপ্তার খাল, তালতলার হোতা খাল স্থানীয় প্রভাবশালীরা বন্দোবস্ত নিয়েছে। এসব খাল প্রভাবশালীরা দখল করে মাটি ভরাট ও বাঁধ দিয়েছে। ফলে প্রতি বছর জলাবদ্ধতা ও পানি শূন্যতায় নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার একর ফসলি জমির ফসল। বাঁধ ও অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণের ফলে বুড়াগৌরাঙ্গ তেঁতুলিয়া নদী থেকে পলিমাটি আসতে পারছে না। ফলে ফসলি জমির উর্বরশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের নিষ্কাশনের শতাধিক খালগুলো কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস বলেন, উপজেলার খাল খননের বিষয় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষে লিখিত ভাবে অবহিত করেছি। আর দখল মুক্ত করা হবে কেউ সরকারি খাল দখল করে নিতে পারেনা।
এসবি/এমআর