বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বুধবার ● ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তারা সংসদে না এসে ‘রাজনৈতিক ভুল’ করছেন। বুধবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা প্রতিপ রাজনৈতিক দলের এই ‘ভুলের’ বিষয়টি তুলে ধরেন। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের বিপরীতে ভরাডুবি ঘটে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। তারা মাত্র আটটি আসনে জয় পায়। ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিতরা এখনও সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সকলের সম্মিলিতভাবে দেশটাকে গড়ে তুলতে চেয়েছি। এজন্য নির্বাচনের আগে সকল দলকে ডেকেছিলাম। তাদের সঙ্গে সুন্দর পরিবেশে বৈঠক করেছি এবং নির্বাচন করার আমন্ত্রণ করেছিলাম। ১০ বছরের উন্নয়নের সুফল বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছে বলেই বহু পূর্ব থেকে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা আমাদের নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। জনগণ সেই ভোট দিয়েছেন। বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে অল্প সিট পেয়েছে, সেই অভিমান করে তারা পার্লামেন্টে আসছেন না, আমার মনে হয় রাজনৈতিক একটা ভুল সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন। কারণ ভোটের মালিক জনগণ, তারা যাকে খুশি তাদের ভোট দেবেন এবং সেইভাবেই তারা ভোট দিয়েছেন। যদি তারা সংসদে আসে আর তাদের যদি কোনো কথা থাকে, তা বলার একটা সুযোগ পাবেন। এই সুযোগ কেবল সংসদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এখন সংসদের কার্যক্রম মিডিয়াতে সরাসরি যায়, সংসদ টেলিভিশনও আছে। এটার মাধ্যমে সারা দেশবাসী তাদের কথা শুনতে পাবেন।

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, এই সুযোগটা তারা কেন হারাচ্ছেন, আমি জানি না। তবে আহ্বান এটাই থাকবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সবাই পার্লামেন্টে আসবেন, বসবেন এবং যার যার কথা তারা বলবেন। সেই আহ্বান জানাচ্ছি। ফখরুল ইমাম টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর আসনে আসীন শেখ হাসিনার কাছে তার অবসরের পর গ্রামে চলে যাওয়ার বিষয়েও জানতে চান। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামটা হচ্ছে আমাদের প্রাণ। গ্রামের মানুষকে আমরা নাগরিক সুবিধা দিতে যাচ্ছি। একটু ভালো হলেই গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসা, এটা আমার কোনোদিনই পছন্দের নয়। গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছি। গ্রামে বড় হয়েছি। গ্রামের কাদামাটি মেখেই বড় হয়েছি। গাছে উঠে খালে ঝাঁপ দিয়েছি। খেলাধুলা করে গ্রামে বড় হয়েছি। একট পর্যায়ে ঢাকা চলে এসেছি, তবে গ্রামের টান কখনও মুছে যায়নি। এখনও মনটা পড়ে থাকে আমার প্রিয় ওই গ্রামে। কাজেই সব সময় এটা আকাক্সক্ষা, যখনই অবসর নেব, আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে থাকব। সেখানকার সবুজ শ্যামল পরিবেশ সব সময় আমাকে টানে। কাজেই এটাই আমার একটা ইচ্ছা। শহরের ইট কাঠের এই বদ্ধ পরিবেশ থেকে গ্রামের উন্মুক্ত পরিবেশে থাকার আমার সবসময়কার আকাক্সক্ষা।

জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আত্ম মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ যাচ্ছি। দেশ আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশকে বিশ্ব সম্প্রদায় এখন সম্মানের দৃষ্টিতে দেখে। যতদিন বেঁচে থাকবেন দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাও য়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে দণি এশিয়ার সবচেয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত কবব। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে বহির্বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের এ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিময় দেশ। আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জানান, চতুর্থবার সরকার গঠন করায় ৯৭টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সরকারি দলের মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনীতি করে দেশের সুনাম ক্ষুন্ন করতে চেয়েছে। তবে আমাদের ঐকান্তিক চেষ্টায় বারবার তা ব্যর্থ হয়েছে। এই কুচক্রী মহল দেশে যাতে কোনোভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ত্রে তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। যারা সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারের নামে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সুনাম ক্ষুন্ন করবে তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন প্রধানমন্ত্রী।

এফএন/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১৭:১১:৪১ ● ৫৫৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ