ঠাকুরগাঁওয়ে সংঘর্ষ: জীবন রায় গুলি চালাতে বাধ্য হবার দাবি বিজিবি’র

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » ঠাকুরগাঁওয়ে সংঘর্ষ: জীবন রায় গুলি চালাতে বাধ্য হবার দাবি বিজিবি’র
বুধবার ● ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


বিজিবির সংবাদ সম্মেলন
ঠাকুরগাঁও সাগরকন্যা প্রতিনিধি ॥
ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরে ভারতীয় গরু জব্দ করা নিয়ে সংঘর্ষের সময় বিজিবির গুলিতে হতাহতের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বিজিবি ঠাকুরগাঁও-৫০ ব্যাটালিয়ন। সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির প থেকে দাবি করা হয়, জীবন রায় তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। মঙ্গলবার রাতে বিজিবির ‘লেজার ক্যান্টিনে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ।

কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, চোরাকারবারীরা পরিকল্পনামূলক জব্দকৃত গরু বিজিবির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ধারালো দেশি অস্ত্র নিয়ে বিজিবির সদস্যদের ওপর চোরাকারবারিরা হামলা করলে নিজেদের জীবন রার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয় বিজিবি। যার কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিজিবির পাঁচ সদস্য আহত হয় বলেও জানানো হয়। ঠাকুরগাঁও-৫০ বিজিবির অধিনায়ক আরও বলেন, উক্ত ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।

এদিকে গত মঙ্গলবার গ্রামবাসী-বিজিবির সংঘর্ষের ঘটনায় হরিপুর উপজেলার বেতন সীমান্তের বহরমপুর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেে বিজিবি সদস্যেদের বিচার দাবি করেছেন নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী। অপরদিকে ঘটনা তদন্তে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শীলাব্রত কর্মকারকে প্রধান করেন সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বহরমপুর গ্রামের এক ব্যক্তি কয়েক মাস আগে তার কেনা একটি গরু নিয়ে মঙ্গলবার যাদুরানীহাটে যাচ্ছিলেন। ওই গরু পাচার করে আনা হয়েছে সন্দেহে বেতনা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা তা জব্দ করে। গরুটি বিজিবির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ চলাকালে বিজিবি প্রায় অর্ধশত গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় প্রথমে চারজন নিহত হওয়ার কথা দাবি করলেও পরে তিনজনের নিহতের খবর নিশ্চিত করা হয়। গুলিবিদ্ধ হয় কমপে ১৫ জন।

বহরমপুর গ্রামের সিরাজুল ও রহমত বলেন, বিজিবি কিছুদিন ধরেই এলাকায় অভিযান চালানোর নামে নিরীহ মানুষের গবাদি পশু ধরে নিয়ে ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছিল। পরে টাকার বিনিময়ে তা ছেড়ে দেয়। বিজিবি সদস্যরা ইচ্ছে করেই গুলি করে মানুষ মেরেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মাসুদ বলেন, ওইগুলো ভারতীয় গরু। সংঘবদ্ধ চোরাকারবারীরা কোনো একসময় এগুলো নিয়ে এসেছিল। তারা বাজারে নিয়ে যাওয়ার সময় সীমান্তের দুই কিলোমিটার ভেতরে আমাদের টহল দল তাদের ধরে ফেলে। গরুগুলি বিওপিতে (ফাঁড়ি) নেয়ার সময় কয়েকশ মানুষ সংঘবদ্ধভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আমরা প্রথমে ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। তাতে আমাদের অস্ত্র তিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিজিবি গুলি করতে বাধ্য হয়।

এদিকে জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি তদন্ত সাপেে ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিহতদের পরিবারকে তিপূরণের আশ্বাস দেন। সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হরিপুর থানার ওসি মো. আমিরুজ্জামান।

এফএন/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪১:৪২ ● ৪৮৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ