দশমিনা(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের দক্ষিন রনগোপালদী গ্রামের মোহাম্মদ হাওলাদারের স্ত্রীআছিয়া বেগম(৮৩) স্বামী মৃত্যুর ৪৩বছরেও বিধবা ভাতা কার্ড পাননি। স্বামী মৃত্যুর পর থেকে চেষ্টা করেও পাননি বিধাব ভাতা। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় আছিয়ার দেখা মিলে ওই এলাকায়। বয়সের ভারে তার কোমর বেঁকে গেছে। কুঁচকে গেছে গায়ের চামড়া। একই গ্রামের মেয়ের স্বামীর বাড়িতে আশ্রায় নিয়েছেন তিনি।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, আছিয়ার ১৫বছর বয়সে বিয়ে হয়। বিয়ের ২৫বছর পরে দু’ ছেলে ও এক মেয়ে রেখে মারা যায় তার স্বামী। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ৮৩বছর বলে জানান প্রতিবেশীরা। আর স্বামী মারা গেছেন ৪৩বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর অন্যের বাড়িতে পেটে-ভাতে কাজ করে দিন চালাতেন তিনি। বয়সের কারণে এখন আর কাজ করতে পারেন না। একমাত্র মেয়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে আছেন তিনি। তার ছেলেদের সংসার চলে দিনমজুরের কাজে। তাই খেয়েনা খেয়ে একই গ্রামে মেয়ের স্বামীর সংসারে থাকেন তিনি। মেয়ের জরাজীর্ণ ঘরে আছিয়া বসবাস করে আসছেন।
আছিয়া বেগম জানান, ভাবছিলাম হ্যার মরার পওে পোলাপাইনে আমাওে খাওন-খোরাকি দিবে। ওগো অভাবের তারনায় ওরাই পোলা মাইয়াই খাওয়াইতে পারে না আমারে খাইতে দ্যাবে কইতোনে। কপালডা ভালো বইল্যা অভাবের মধ্যেও ছোট মাইয়ায় থাকতে খাইতে দেয় আমারে। ওর লগেই আমি থাহি। তয় আমার বয়স অইছে, খাটাখাটনি করতে পারিনা, শরিলে অসুখ-বিসুখ ধরছে। টেকার অভাবে ভালো ডাক্তারও দেহাইতে পারিনা টাহার অভাবে। আমার মাইয়া মাইনসের বাসায় কাজ করে তা দিয়া কোন মতে খাই। সরকারে বলে কার্ড দেয় আমারে কি দেবে না। কই আমি তো বুড়া থুরথুরা অইয়া গেছি আমারে দ্যায়নি। তিনি আরও কান্না কন্ঠে জানান আমি মরে যাবার আগে পাইবো কি সরকারি কার্ড।
আছিয়ার মেয়ে পারভিন জানান, আমার মা আমি ফালাইতেপারিনা আমি নিজেও বিধাব হয়ে মানুষের কাজ করে মা মেয়ের সংসার কোন মতে চলে। আমরা কোন সরকারি সুবিধা পাইনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ফেরদৌস জানান, উপজেলার দরিদ্র মানুষের সঠিক পাওনা টা বুঝিয়ে দিতে সকল দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। সরকারের দেয়া সকল সুবিধা সুন্দর ভাবে মানুষকে বুঝিয়ে দেয়া দায়িত্ব। যদি কেউ বাদ পড়ে থাকে তাহলে তারা সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সঠিক ভাবে যাচাই বাছাই করে সুবিধা প্রদান করা হবে।
এসবি/এমআর