শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়-আমতলীতে এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়!

প্রথম পাতা » বরগুনা » শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়-আমতলীতে এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়!
বুধবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২০


শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনার আমতলী উপজেলার শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা জমা না দিলে এ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা নিচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একে এম শাহ আলম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ মোতাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি’র বকেয়া টাকা আদায় করছি। কিন্তু তার কাছে মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র দেখতে চাওয়া হলে তিনি পরিপত্র দেখাতে পারেননি। দ্রুত এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
জানাগেছে, আমতলীর শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেনীতে ৩’শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। করোনা ভ্ইারাসের প্রার্দূভাবের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত ৩১ অক্টেবার শিক্ষার্থীদের লেখাপাড়া চালিয়ে নেয়ার জন্য এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়। ৫ অক্টোবর এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা শুরু হয়। বর্তমানে ষষ্ঠ এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার খাতা জমা নেয়া হচ্ছে। আমতলী শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষায় সেশন, টিউশন ও আইসিটি ফিয়ের নামে শ্রেনী ভেদে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধার্য্যকৃত টাকা জমা না দিলে শিক্ষার্থীদের ্এ্যাসাাইনমেন্ট খাতা জমা নেয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।  নবম শ্রেনীন শিক্ষার্থী সুমন, হাসিবুল ইসলাম, আল আমিন ও শামীম জানান, প্রধান শিক্ষক স্যার আমাদের কাছ থেকে ৫’শ টাকা আদায় করেছে। টাকা না দিলে পরীক্ষার ্এ্যাসাইনমেন্ট খাতা ও প্রশ্ন দেয়নি। টাকা দেওয়ার পরে খাতা ও প্রশ্ন দিয়েছে।
ষষ্ঠ শ্রেণীর আয়শা আক্তার জানান, এ্যাসাইনমেন্ট খাতা ও প্রশ্ন নিতে প্রধান শিক্ষক স্যারকে ৪’শ টাকা দিয়েছি। টাকা জমা না দেওয়ায় স্যারে খাতা দেয়নি। পরে টাকা জমা দিয়ে খাতা এনেছি।
অষ্টম শ্রেনীর হাসান জানান, আমাদের কাছ থেকে ৫’শ টাকা করে নিয়েছে। সপ্তম শ্রেনীর পুর্ণিমার বড় ভাই জাহিদ বলেন, আমার বোনের কাছ থেকে ৪’শ ৫০ টাকা নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় প্রধান শিক্ষক এ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা নেয়নি। টাকা পরিশোধ করার পরে খাতা জমা নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষক স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় নিজের ইচ্ছা মাফিক বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। তারা আরো বলেন, এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা নিচ্ছে, আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম কিন্তু কাজ হয়নি।
আমতলী শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম শাহ আলম এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ মোতাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ টাকা আদায় করছি।
শাখারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান বলেন,  এ্যাসাইনমেন্টের নামে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের টাকা উত্তোলন করতে পারবে না। বিষয়টি খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, এ্যাসাইনমেন্টের নামে কোন টাকা এবং সেশন ফি’ও আদায় করতে পারবেন না। বিদ্যালয়ে এই মুহুর্তে টাকা আদায় করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৪:৫৩ ● ৩৪২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ