ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ ২০ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রথম ধাপের কাজ এ বছরের জুনের আগে শেষ হবে। এমনটি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণকাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে তিনি আরো জানান, মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের কাজও শেষ হবে এ বছরের ডিসেম্বরে। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারের ভিত্তিতে নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই প্রকল্পটির বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় আট হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী জানান, অর্থ সংকটের কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হয়, গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ওবায়দুল কাদের জানান, এরইমধ্যে প্রথম ধাপের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, আর পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ২০ শতাংশ। ওবায়দুল কাদের বলেন, ফার্স্ট ফেজ বনানী পর্যন্ত আমরা আশা করছি মে মাসেই কাজ শেষ হবে।
মঙ্গলবার দুটি স্প্যান রাতে বসেছে। ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে। ফার্স্ট ফেজ জুনের আগে হয়ে যাবে। সেকেন্ড ফেজ ২০২০ সালের জুলাই নাগাদ হয়ে যাবে। থার্ড ফেজ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরেই তিন ধাপের কাজ সমাপ্ত হবে। এ সময় তিনি জানান, মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের কাজও শেষ হবে এ বছরের ডিসেম্বরে। চট্টগ্রামে চলছে কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণকাজও, যার নাম হবে বঙ্গবন্ধু টানেল। এ সময় ওবায়দুল কাদের কথা বলেন সাম্প্রতিক রাজনীতি প্রসঙ্গেও। সমালোচনা করেন বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বক্তব্যের। ওবায়দুল কাদের বলেন, কামাল হোসেনসহ সরকারবিরোধীরা নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের কাছে অভিযোগ করলেও তারা এর কোনো মূল্য দিচ্ছেন না। বরং এর মধ্য দিয়ে তারা ‘তামাশার পাত্রে’ পরিণত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের নামে ‘প্রহসন’ হয়েছে বলে মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় মন্তব্য করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন। হুমকির সুরে তিনি বলেছিলেন, আমি বিশ্বাস করি, ১৬ কোটি মানুষ এটা মেনে নেবে না। আমাদের যা করণীয় আছে, আমরা অন্তত করব। বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাউলাতে ‘ঢাকা এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের’ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কামাল হোসেনের ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আসলে যারা এ ধরনের অপবাদ দিচ্ছে, তারা নিজেরাই আজকে দেশে-বিদেশে তামাসার পাত্র হয়েছে। কারণ জনগণ তাদের এই অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না। জাতিসংঘসহ উন্নত বিশ্ব তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হচ্ছে না। কাজেই তারা নিজেরাই অপপ্রচারের জন্য তামাসারপাত্র হয়ে গেছে। যাদের কাছে তারা নালিশ করছে, তাদের কাছে এর ‘কানা-কড়ির’ও দাম নেই। ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে অনিয়মের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত করুক, অসুবিধা কি? এ নিয়ে আমাদের কোনো বাধা নেই, চিন্তাও নেই। তারা ট্রাইব্যুনালে নেবেন? হোক ট্রাইব্যুনাল। অসুবিধা নেই তো। এসব নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথাও নেই, কোনো হস্তক্ষেপও নেই। কোনো প্রকার বাধা, প্রতিবন্ধকতা সরকারের পক্ষ থেকে নেই। বিচার বিভাগ স্বাধীন, তারা কোনো তদন্ত করলে করতে পারে। নির্বাচনের আগে সংলাপে প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলো পূরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের কোন দাবিটা রাখেননি, সেটা তারা নির্দিষ্টভাবে বলুক, তথ্য-প্রমাণসহ বলুক। সংলাপ হবে এমন কোনো ভাবনা-চিন্তা দেশে বিদেশে কোথাও ছিল না। আমরা দলীয়ভাবে সংলাপের বিরুদ্ধে ছিলাম। বাংলাদেশে যেটা সম্ভব ছিল না, সরকার প্রধান সংলাপ ডাকল। এ রকম অসম্ভবকেও সম্ভব করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যেটা দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসা পেয়েছে। এখন তারা যদি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর, আন্দোলন-নির্বাচনে শোচনীয় ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এসব অবান্তর অভিযোগ তোলে- সেটা কিন্তু দেশে-বিদেশে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হবে। দেশের রাজনীতি আমলানির্ভর হয়ে পড়েছে বলে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মন মানসিকতায় রাজনৈতিক হয়েও যারা আমলা, তারা আমলার চেয়েও ভয়ঙ্কর, তিনি (মইনুল) সেই রকমই। তিনি যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন তখন তার যে আচার- আচরণ ছিল, সেটা আমলার চেয়েও ভয়ঙ্কর ছিল।
এফএন/এমআর