নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
শস্য ভান্ডার বলে পরিচিত দিনাজপুর নবাবগঞ্জ উপজেলা। উপজেলায় আলুর পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছে স্থানীয় কৃষকরা। এবার আলু চাষ বেড়েছে এলাকায়। কৃষকরা চলতি মৌসুমে আলু ও সরিষা চাষের পর এখন পরিচর্যা করছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলকায় চারদিক শুধু আলু ও সরিষা গাছের সবুজের সমাহরো। রোপা আমন মৌসুমে কৃষকরা ধানের ন্যয্যমূল্যে না পেয়ে আগাম রোপা আমন কর্তন করে লাভের আশায় রবি শস্য ফসলের দিকে ঝুকে পরে।
উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে অন্যন্যে বছরের চেয়ে এবার বেশি হয়েছে আলু ও সরিষা চাষ। যেসব জমিতে আলু সরিষা চাষ করা হয়েছে সেসব জমিতে সময় মত সেচ সার ওষধ প্রয়োগ করাসহ আলু সরিষার পরিচর্যার কাজে এখন ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। শীত মৌসুমের প্রথমদিকে আবহাওয়া পরোপুরি অনুকুলে থাকায় আলু ও সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেধেছিল এলাকার কৃষকরা। কিন্ত ডিসেম্বর শুরুতে লাগাতার শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় আলুর গাছে পাতায় মড়ক ধরেছে। ফলে আলুর ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় আলু চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের রোপন করা আলু তুলে বেশী দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে অনেক কৃষক।
উপজেলার মাহমুদপুর ও পদুমহার এলাকার কৃষকরা বলেন, এবার আলু চাষে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও সেই স্বপ্ন আর পূরণ হচ্ছে না, আমাদের স্বপ্ন মনে হয় স্বপ্নই থেকে যাবে এই ঘন কুয়াশায় আলুর গাছ মারা যেতে শুরু করেছে, এইরকম প্রতিনিয়ত ঘন কুয়াশা হলে আমারা আলু চাষে সফল হতে পারব না তাই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আতঙ্কে আছি।
উপজেলার পশ্চিম ফতেপুর গ্রামের কৃষক মোঃ হারুন মিয়া বলেন, ধান বিক্রি করে অন্যের তিন বিঘা জমি চানা নিয়ে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আলু চাষ করছিলাম, তবে এই শৈত্যপ্রবাহ এবং প্রচন্ড ঘন কুয়াশার কারণে আলুর গাছ মরতে শুরু করেছে ফলে আলুর ফলন নিয়ে বিপর্যয়ের শঙ্কায় আছি।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এবার এই উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরণ করা হলেও প্রায় ১৭ শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হচ্ছে। তবে এই ঘনকুয়াশার ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওযায় বাজারে এর প্রভাব পরবে বলে জানিয়েছেন আলু ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও অল্প সময়ে লাভজনক ফসল সরিষা চাষ করা হয় হয়েছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে। যা প্রায় গত বছরের মতো। এই আলু ও সরিষার চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।
আলু ও সরিষার চাষ গাছের পাতার মড়কও ফলন বিপর্যয়ের বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তাফিজহর রহমান জানান, লাগাতার শৈত্যপ্রবাহ ঘন কুয়াশায় দু’এক জায়গা থেকে আলুর গাছে মরে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। আলুর গাছের মড়ক ঠেকাতে কৃষকদের ঔষধ প্রয়োগ করা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে তাপমাত্রা বেড়েছে আর শেত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশা না হলে আলু সরিষাসহ সবজির ক্ষতি হবে না এবং ফলনও ভালো হওয়ার আশা করা যায়।
এআরএম/এমআর