পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দশমিনায় থানা পুলিশের হেফাজতে অসুস্থ হওয়ার পর শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিটন খান নামে এক অটোরিক্সা চালকের মৃত্যুর অভিয্গো উঠেছে। পরিবারের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা সুপারের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লিটন খানকে থানায় নেয়া হয়েছিল। পরে পুলিশ তাকে অসুস্থ অবস্থায় দশমিনা হাসপাতালে পাঠালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১টার পর তার মৃত্যু হয়।
সোমবার (৭নভেম্বর) দুপুরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লিটনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। লিটন খান জেলার দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলাউদ্দিন খানের পুত্র। তিন সন্তানের জনক লিটন খান ঢাকায় সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত।
নিহত লিটনের ভগ্নিপতি মোফিজুর রহমান জানান, শনিবার রাতে মাদ্রাসা সংলগ্ন পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে কে বা কারা মাছ মেরে ফেলে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা সুপার মাওলানা সিহাব উদ্দিন দশমিনা থানায় লিটনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার (৬ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। লিটনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে ভগ্নিপতি মোফিজুর রহমান সঙ্গে সঙ্গে থানায় যান। সেখানে গিয়ে দেখেন অসুস্থ অবস্থায় লিটনকে পুলিশ স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নিয়ে যাচ্ছে।
লিটনের স্ত্রী মাজেদা বেগম বলেন, জমি নিয়ে আক্রাম খান সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে লিটনের বিরোধ চলছিল।
লিটনের পিতা আলাউদ্দিন খান জনান, পুত্রবধূ মাসেদা, তিন নাতি মামুন, রহমান এবং জাবেদকে নিয়ে দুপুরের ভাত খাওয়ার সময় পুলিশ লিটনকে ধরে নিয়ে যায়। সে সময় লিটন গেঞ্জি গায়ে ছিল, বিষ পেল কোথায়। নিহতের বড় ছেলে নবম শ্রেনীর ছাত্র আব্দুল আল মামুন এ ঘটনার জন্য মাদরাসা সুপার মাও. সিহাব. মফিজ খা ও জয়নাল খা দায়ী করে তাদের বিচারের দাবী জানান।
মাদরাসার সুপার মাও. সিহাব উদ্দিন জানান, মাদরাসার জমি ও পুকুরে বিষ প্রয়োগের জন্য লিটনকে সন্দেহ করে ইউএনওকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।
মাদরাসা সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া ফেরদৌস জানান, মাদ্রাসার সুপারের অভিযোগ পেয়ে থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
দশমিনা থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম জানান, মাদ্রাসা সুপার মাওলানা সিহাব উদ্দিনের একটি লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এএসআই মামুনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলি। এএসআই মামুন লিটনকে রবিবার বিকেলে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে আসে। প্রসাবের কথা বলে বাথরুমে গিয়ে সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক জানায় লিটন বিষপান করেছে।
জেআর/এমআর