সিডরের ১৩ বছর-কলাপাড়ায় শোক কাটেনি স্বজনহারা পরিবারে

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » সিডরের ১৩ বছর-কলাপাড়ায় শোক কাটেনি স্বজনহারা পরিবারে
রবিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০২০


কলাপাড়ায় শোক কাটেনি উপকূলের স্বজনহারা পরিবারে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

১৫ নবেম্বর আজ। সিডর তান্ডবের ১৩ বছর। প্রকৃতির বুলডোজার খ্যাত সুপার সাইক্লোন ঘুর্ণিঝড়ের ভয়াল তান্ডবের কথা সাগরপারের কলাপাড়ার মানুষ আজও ভোলেনি। এখনও কলাপাড়ায় সাত হাজার পরিবার বেড়িবাঁধের বাইরে ঝুপড়ি ঘরে ঝুঁকিতে বসবাস করছে। এছাড়া যাদেরকে পুনর্বাসিত করা হয়েছিল তারও ৯৫ ভাগ ঘরের খবর নেই। বাড়ছে গৃহহারা পরিবারের সংখ্যা। তবে নতুন করে ১২টি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক পরিবারকে দুই বছরে গৃহপুনর্বাসন সহায়তা দেয়া হয়েছে।
২০০৭ সালে সিডরের ভয়াল তান্ডবে কলাপাড়ায় সরকারি হিসাবে ৯৪ জন মানুষের প্রানহানি ঘটে। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ১০৪ জন। আজও খোঁজ মেলেনি সাত জেলে ও এক শিশুর। আহত হয়েছিল ১৬৭৮জন। এর মধ্যে ৯৬ জন প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে। বিধবা হয়েছে ১২ গৃহবধু। এতিম হয়েছে ২০ শিশু। সম্পুর্ণভাবে ঘর বিধ্বস্ত হয় ১২হাজার নয় শ’ পরিবারের। আংশিক বিধ্বস্ত হয় ১৪ হাজার নয় শ’ ২৫ পরিবারের ঘর। তিন হাজার দুই শ’ ২৫জেলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সিডরের কালো থাবায় শতকরা ৯০ পরিবার ক্ষতির শিকার হয়। এর মধ্যে ৫৪৭৩ টি পরিবারকে ঘর ণির্মাণ করে দেয়া হয় । ৫৪০ পরিবারের জন্য ব্যারাক হাউস নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে সাত বছর আগে। কিন্তু এসব ব্যারাকের অন্তত ৪০০ কক্ষে লোকজন থাকছে না। ব্যারাক হাউসের চাল বেড়া খুটি চুরি হয়ে গেছে। সম্পুর্ণ বিধ্বস্ত আরও চার সহ¯্রাধিক পরিবারের প্রয়োজন গৃহপুনর্বাসন। বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়া ১২হাজার পাঁচ শ’ ১৬ পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে ক্ষতিপুরণ দেয়া হয়। এছাড়া তিন হাজার, আড়াই হাজার, দুই হাজার এবং এক হাজার টাকা করে আরও ছয় হাজার সাত শ’ পরিবারকে গৃহ নির্মাণে সহায়তা দেয়া হয়েছে। গৃহনির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সহায়তা দেয়া হয় অন্তত সাত হাজার পরিবারকে। এ খবর সরকারের বিভিন্ন সুত্রের। তারপরও সম্পূর্ণ এবং আংশিক বিধ্বস্ত পাঁচ হাজার পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে। লালুয়ার চারিপাড়ার ভাঙ্গা বাঁধের স্লোপে থাকা অন্তত ৫৩ পরিবারের লোকজন জানান, এখনও এক চিলতে জমির সন্ধান তাঁদের মেলেনি। রাবনাবাদ পাড়ের এসব জেলে পরিবারের জোয়ার নিত্যদিনের জলোচ্ছ্বাসে পরিণত হয়েছে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকছেন। এরা বেড়িবাঁধের বাইরে ঝুপড়ি তুলে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানান, এখনও বেড়িবাঁধের বাইরে কমপক্ষে সাত হাজার পরিবার ঝুকিপূর্ণ বসবাস করছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, গৃহহীন, হতদরিদ্র মানুষকে গৃহপুনর্বাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কলাপাড়ায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩০ পরিবারকে গৃহপুনর্বাসন করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে এ উপজেলায় আরও ৪৫০ হতদরিদ্র পরিবারকে গৃহপুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া আবাসন, আশ্রায়ন প্রকল্পের মধ্য দিয়েও মানুষকে আবাসন পুনর্বাসন করা হচ্ছে।

এমইউএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:১৪:৩৯ ● ৩১৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ