আমতলীতে অসহায় নারীর জমি দখলের অভিযোগ
প্রথম পাতা »
বরগুনা »
আমতলীতে অসহায় নারীর জমি দখলের অভিযোগ
আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা ও তার ভাই সোহাগ প্যাদার নেতৃত্বে আমতলী ইউএনও অফিসের সামনে দখলীয় জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ এনে ফাতেমা আক্তার কলি নামের এক অসহায় নারী তার শিশু সন্তান নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রবিবার (৮ নভেম্বর) আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনের কাছে দখলবাজ জেলা পরিষদ সদস্য নয়ন মৃধাকে গ্রেফতার করে তার জমি উদ্ধারের দাবী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে আমতলী ইউএনও অফিসের সামনে আমার স্বামী সাবেক পৌর কাউন্সিলর মোঃ জান্নাতুল ফেরদৌস ব্যবসার জন্য জমি চেয়ে বরগুনা জেলা পরিষদে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ সোয়া শতাংশ জমি বরাদ্দ দেয়। ওই জমিতে ঘর তুলে ব্যবসা করে আসছিল আমার স্বামী ফেরদৌস। ২০১০ সালে আমতলী পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বিজয়ী হয়। পরে সমাজসেবা ও অসুস্থতার জন্য ব্যবসা বন্ধ করে দেন। বিগত ১১ বছর ধরে ওই দোকান ঘরটি বন্ধ ছিল। গত দুই মাস পূর্বে বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা ওই ঘর দখলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। ২৬ অক্টোবর পরিকল্পিতভাবে জেলা পরিষদ সদস্য তার লোকজন দিয়ে আমার স্বামীর পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। ওই সময় থেকে আমার স্বামী বরগুনা জেল হাজতে রয়েছে। এই সুযোগে শুক্রবার প্রকাশ্যে দিবালোকে বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা ও তার ফুফাতো ভাই সোহাগ প্যাদার নেতৃত্বে অর্ধ-শতাধিক লোকজন নিয়ে দোকান ঘর ভেঙ্গে দখল করে নেন এবং দোকান ঘরের সমুদয় মালামালা লুট করে নিয়ে যায়। শত-শত লোক এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করে কিন্তু তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। পরে ওই জমিতে জেলা পরিষদ সদস্য তার লোকজন দিয়ে নতুন ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। নিরুপায় হয়ে আমি আমতলী থানায় জেলা পরিষদ সদস্য আবুল বাশার নয়ন মৃধা ও তার ভাই সোহাগ প্যাদার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেই। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পায়। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে জেলা পরিষদ সদস্য ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করেনি।
তিনি আরো বলেন, আমি ঘর তোলায় বাঁধা দিলে তার লোকজন আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। আমি একজন অসহায় নারী আমার ১৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান ও একটি ৫ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। আমি আমার ছেলে সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছি। জেলা পরিষদ সদস্য ও তার লোকজনের ভয়ে আমি ঠিকমত চলাফেরা করতে পারছি না। আমার স্বামী জেলে থাকার সুযোগে তিনি দোকান ঘর দখল করে নিয়েছেন। জেলা পরিষদ সদস্য আবুল বাশার নয়ন মৃধা ও তার ভাইকে গ্রেফতার করে জমি ফিরিয়ে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস’র ভাই হাসান মৃধা ও তার পাঁচ বছরের শিশু পুত্র নিশকাত।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য আবুল বাশার নয়ন মৃধা জমি দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যার নামে বরগুনা জেলা পরিষদ জমি বন্দেবস্ত দিয়েছে তিনিই ঘর তুলছেন।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত জমির মালিককে জমি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ১৯:১০:৫৬ ●
৩৭১ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)