আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার উপকুলীয় উপজেলা আমতলী-তালতলী যোগাযোগের একমাত্র আঞ্চলিক সড়কের বেহাল দশার কারনে চারমাস ধরে ঢাকা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে তালতলীর বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঢোবা ও খানাখন্দের কারনে বাস মালিক সমিতি সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে উপকুলের দুই উপজেলার অন্তত লক্ষাধীক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, আমতলী-তালতলীর ফকিরহাট পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার উপকুলীয় আঞ্চলিক সড়ক। সোনাকাটা ইকোপার্ক ও শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কে ঢোবা ও খানাখন্দের কারনে সোনাকাটা ইকোপার্ক ও শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভ্রমন বন্ধ রয়েছে। ফলে রাজাস্ব হারাচ্ছে সরকার। এছাড়াও ওই সড়ক দিয়ে আমতলী-তালতলী দুই উপজেলার অন্তত লক্ষাধীক লোক যাতায়াত করে। ওই সড়কের মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা ব্রীজ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এবং কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে তালতলী হাসপাতাল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক ঢোবা ও খানাখন্দে ভরপুর। ২০-৩০ গজ দুরত্বে রয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। এ সড়ক যেন ঢোবায় পরিনত হয়েছে। ঢোবায় গাড়ী আটকে যান চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। খানাখন্দের কারনে সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পরেছে। এতে গত চারমাস ধরে ঢাকা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে তালতলীর বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই খানাখন্দ সড়ক দিয়ে ছোট ও মাঝারি যানবাহন ও মানুষ যাতায়াত করছে। এতে দুর্ভোগে পরেছে দু’উপজেলার অন্তত লক্ষধীক মানুষ। প্রতিদিন সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত ওই সড়ক সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সড়কে চলাচলকারী গাড়ীর চালকরা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, সড়কের মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা ব্রীজ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক। ওই সড়কের প্রতি ২০-৩০ গজ দুরত্বে রয়েছে ঢোবা ও বড় বড় খানাখন্দ। ঢোবায় ও খানাখন্দে গাড়ী আটকে চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের ইট-পাথরের সুরকি বের হয়ে মাটি উঠে গেছে। খানাখন্দের গর্তে গাড়ীর চাকা ফেঁসে যাচ্ছে। কাঁদা মাটিতে মিশে সড়ক একাকার হয়ে গেছে। এছাড়া ওই সড়কের কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে তালতলী হাসপাতাল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে খানাখন্দ।
তালতলী উপজেলার যুবলীগ যুগ্মআহবায়ক ব্যবসায়ী মোঃ শামিম পাটোয়ারী বলেন, সড়ক যেন ঢোবায় পরিনত হয়েছে। সড়ক দিয়ে চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পরেছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানাই।
তারিকাটা এলাকার মোতালেব মিয়া, নশা হাওলাদার, মোশাররফ হোসেন, কবির উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম ও বাহাদার বলেন, গত দু’বছর ধরে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের লোকজন দেখেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না।
আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন মিস্ত্রি, বাকী বিল্লাহ ও জাফর বিশ^াস বলেন, এটা সড়ক নয় যেন খাল। সড়ক দিয়ে গাড়ী ও মানুষ চলাচলে খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবী জানাই।
বাস গাড়ী চালক মজিবুর রহমান, শানু হাওলাদার ও আবদুস সালাম বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারনে বাস চলাচলা বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ।
বরগুনা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য মোঃ হাসান মৃধা বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারনে গত চার মাস ধরে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।
বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফোরকান আহম্মেদ খাঁন বলেন, এ সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ নিয়ে গেছে। তাই তারা এ সড়কের সংস্কার কাজ করবেন।
বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হায়দার কামরুজ্জামান বলেন, এ সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগকে হস্তান্তর করার কথা ছিল কিন্তু করেনি। তাই আমরা সংস্কার কাজ করতে পারছি না।
এমএইচকে/এমআর