নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) রুমে ঢুকতে লাগবে না অনুমতি, ডাকতে হবে না স্যার। একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে সাধারণ মানুষের সেবায় জনগণের কাছে নিজেই এগিয়ে এসেছেন তিনি। সরাসরি শুনছেন অভিযোগ। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দিচ্ছেন আইনি সহায়তা।
বলা হচ্ছে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামানের কথা।ইতোমধ্যে থানায় জনগণের দরবার গড়ে তুলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।
প্রথাগতভাবে থানায় ওসির কক্ষে ঢুকতে অনুমতির প্রয়োজন হয় সাধারণ মানুষের। গ্রামের মানুষ সরাসরি পুলিশ কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলছেন, এমনটি সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু ব্যতিক্রম বিরামপুর থানা।
সেখানকার ওসির রুমের দরজায় ঝুলছে ‘‘এটা একজন গণ কর্মচারীর অফিস কক্ষ, যে কোনো প্রয়োজনে এই অফিস কক্ষে ঢুকতে অনুমতির প্রয়োজন নাই’’ সরাসরি রুমে ঢুকুন। ওসি-কে স্যার বলার দরকার নাই’’।
অবাক করার মতো হলেও এমন উদ্যোগ নিয়েছেন দিনাজপুরের বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান। বিষয়টির প্রশংসা করছেন পুরো জেলার জনগণ।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে বিরামপুর থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন তিনি। তারপর থেকেই প্রশংসিত হচ্ছে তার নানা কর্মকাণ্ড। এই উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যেই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন।
বিরামপুরের বাসিন্দা বিদুৎ হোসেন বলেন, থানায় এসে দেখলাম ওসির রুমের সামনে ঝুলানো ব্যানারে লেখা, তার রুমে ঢুকতে কোন অনুমতি লাগবে না। তাকে স্যারও ডাকতে হবে না। বিষয়টি অনেক ভালো লাগলো। ওসি নিজেই ভাই বলে ভেতরে ডেকে নিয়ে কথা বললেন। জিডি করতে সহায়তা করলেন। এমন অফিসারই তো চাই।
ওসির সঙ্গে খোলামেলাভাবে কথা বলতে পেরে খুশি সব শ্রেণি-পেশার স্থানীয় জনগণ। তারা মনে করেন, এভাবে সাধারণ মানুষ পুলিশের কাছে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারলে তা সবার জন্যই কল্যাণকর হবে।
উপজেলা মাদক প্রতিরোধ ও জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শুধু বিরামপুর থানাই নয়, দেশের প্রতিটি থানা হোক জনগনের আস্থার স্থল। পুলিশ সত্যিই পরিচিত হোক জনগণের বন্ধু হিসেবে।
ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ‘‘মুজিব বর্ষ উপলক্ষে পুলিশের স্লোগান হচ্ছে ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের আইজিপি মহোদয় চাচ্ছেন পুলিশ আরও জনবান্ধব হোক। আমি খেয়াল করেছি মানুষ ওসির রুমে ঢুকতে ইতস্তত বোধ করে, ভয় পায়। অনেক সময় অনুমতির জন্য ঘোরাফেরা করে। এতে জনগণের সঙ্গে একটা দূরত্ব থেকে যায়। আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি। মানুষ আমাকে তাদের একজন ভাববে এটাই আমি চাই। তাই রুমের বাইরে ওই লেখা টানিয়েছি।’’
এআরএম/এমআর