কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা সাগরকন্যা অফিস॥
খাজুরা আশ্রয় কেন্দ্র সংলগ্ন এ আয়রণ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করে সাতটি গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষ। অথচ গ্রামীণ জনপদের এ আয়রণ সেতুটি এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। আয়রণ সেতুটি মানুষের চলাচলের জন্য নির্মিত হলেও নরবরে অবোকাঠামো এখন ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। অরক্ষিত সেতুটি ধ্বসে পরে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ফলে সেখানকার পথচারীদের নিরাপদ চলাচলে দেখা দিয়েছে অনিয়শ্চয়তা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের ফাঁসিপাড়া ও খাজুরা গ্রামের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ২০০৩ সালে নির্মাণ করা হয় খাজুরা আয়রণ ব্রীজটি। এ সেতুটি দিয়ে’ই সাতটি গ্রামের অন্তত ৮ হাজার মানুষের বন্দরে য়াতায়াতের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। তবে দীর্ঘদিন ধরে খালের ক্ষয়ষ্ণু নোনা পানির কারণে নরবরে অবোকাঠামো নিয়ে সেতুটি এখন একেবারে অরক্ষিত। মানুষ চলাচলের অনুপযোগি সেতুটি যে কোন সময় সম্পূর্ণ ধ্বসে পরার আশংকায় রয়েছেন ভুক্তভোগিরা। সেতুটি ইতোমধ্যে ভেঙ্গে ধ্বর্সস্তুপে পরিণত হয়েছে। মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে লোহার তৈরী মূল সেতুর অবকাঠামো। অনেকটা বাধ্য হয়ে’ই পথচারীদের ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পারাপার করতে গিয়ে প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি চলাচলের উপযোগি করতে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে মেরামত করেছেন বেশ কয়েকবার। তবে এখন আর তাও সম্ভব হচ্ছে না। তাই আশ্রয়বাসীরা চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে চলাচল করছে। ফলে যান চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটেই বন্দরে আসতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। ভুক্তভোগীদের দাবী দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট দফতরে ধর্ণা দিলেও সেতুটি পূনঃনির্মাণে এগিয়ে আসেনি কেউ। ফলে আজও চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে খাজুরা, পশ্চিম কুয়াকাটা, মেলাপাড়া, মংথয়পাড়া, নাইউরীপাড়া, ফাঁসিপাড়া, বাহামকান্দ ও ফাঁসিপাড়া আশ্রয়ন কেন্দ্রের দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী অসহায় মানুষগুলোর। আয়রণ সেতুটি পাড় হয়ে কয়েক’শ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। করোনার প্রভাব কমলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারবে কিনা এ নিয়ে সংশয়ে রয়েছে অভিভাবকরা।
আশ্রয়নের বাসিন্দা শ্রী সুধীর চন্দ্র বলেন, গত চার বছর ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতিদিন ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। আবুল হোসেন বলেন, আমি গত সপ্তাহে সেতুটি পাড় হওয়ার সময় পাটা ভেঙ্গে পরে হাটুতে ব্যাথা পেয়েছি। আঃ রাজ্জাক বলেন, আমরা আশ্রয়নবাসি বার বার বিভিন্ন দপ্তর ধর্ণা দিয়েও কোন ফল পাইনি। তবে মাসখানেক আগে মাপঝোপ করা হয়েছে। কবে নাগাত কাজ শুরু হবে তার হদিস নেই।
এ বিষয়ে লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ওখানকার মানুষ দূর্ভোগে রয়েছে। সেতুটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে মাটি পরীক্ষা-নীরিক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি অচিরেই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে। বর্তমানে ওখানে বসবাসকারীরা বাঁশের সাঁকো তৈরী করে চলাচল করছে।
কেএস/এমআর