পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পিরোজপুরের নাজিরপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্র ও যুবলীগের ২১নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষে ১৪টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার হাসপাতাল ব্রীজের ঢালের বুইচাকাঠী টেম্পুষ্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায়।
এ হামলায় এক পক্ষের তারেক জামিল রানা তাজ (১৯), রাজিব শেখ (১৮), মানবিন্দু মিস্ত্রী (১৮), রানা বিশ্বাস (১৮), মধু খান (৩২), বেল্লাল হাওলাদার (১৯), রানা হাওলাদার (২২), হৃদয় খান (১৬), হৃদয় মোল্লা (১৬), মিলন (৩৪), কাওছার মৃধা (২২), বাপ্পি খান (৩৫), রায়হান সর্দার (১৮), মিরাজ মৃধা (১৭), প্রিন্স হাওলাদার (১৯), নুরুল আমীন (২৫), নয়ন ফরাজী (২০) আহত হয়েছে।
এ সময় অন্য পক্ষের জোবায়ের হিমেল (২৫), শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে আলম প্রিয়ংকা (২৫), স্মরন শিকদার (১৮), কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. রাকিব (২০) আহত হয়েছে।
আহত নুরে আলম প্রিয়ংকা জানান, আমি শানিবার দুপুর ১২টার দিকে শ্রীরামকাঠী বন্দরের সোনালী ব্যাংকের সামনের একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার কালে শ্রীরামাকাঠী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মিঠুর নেতৃত্বে ৫/৬ জন যুবলীগ কর্মী আমার উপর হামলা করে আহত করে।
এ হামলায় গুরুতর আহত স্মরণ শিকদার (১৮) ও তারেক জামিল তাজ(১৯)কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীরা শ্রীরামাকাঠী বন্দরের পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন বলে আহতদের দাবী।
প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু জানান, ওই দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে উপজেলার দিকে যাওয়ার সময় ওই মারামারির খবর পেয়ে ঘটনা স্থালে গিয়ে দেখি উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. তরিকুল ইসলাম চৌধুরী তাপসের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের ৪/৫ জন কর্মী হাতে থাকা লোহার রড় দিয়ে মোটর সাইকেল ভাংচুর করছে। পরে আমি সেখনে গেলে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সহ সেখানে থাকা হামলা কারীরা ব্রীজের নীচে নেমে যায়।
উপজেলা যুবলীগ সহসভাপতি মো. ফারুক হাওলাদার জানান, ওই দিন সকাল ১০টার দিকে আমরা নাজিরপুর থেকে শ্রীরামকাঠী যাওয়ার পথে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম চৌধুরী তাপসের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে। এ সময় হামলা করে আমাদের ২০/২৫ জনকে আহত করে এবং কাওছার শেখ, রিপন, রাজিব, হৃদয় খান, হৃদয় মোল্লা, মিলন, নয়ন শেখ, শরিফুল, পার্থ ওঝা, হামিম ও কাওছার মোল্লা এদের ১১টি ও ৩ পথ চারী সহ ১৪টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে ।
উপজেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম চৌধুরী তাপস ওই হামলার সাথে নিজেকে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, তবে ঘটনাটি শুনেছি। শ্রীরামকাঠী থেকে নাজিরপুরে আসার সময় সকাল ১০টার দিকে ওই ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মিঠুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা স্মরন শিকদার ও কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাকিব হোসেনকে মারধর করা হয়েছে।
যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিঠু তার বিরুদ্ধে আনিত হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) ছাত্রলীগের কিছু কর্মীরা দক্ষিন শ্রীরামাকাঠীর একটি জমি দখল করিয়ে দিতে সেখানে যায়। এ নিয়ে স্থাণীয়রা তাদের মার-ধর করে। এ ঘটনাকে আমাদের দায়ী করে উপজেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক তাপস চৌধুরীর নেতৃত্বে এ হামলা হয়।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইন চার্জ মো. মুনিরুল ইসলা মমুনির জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এখনো কোন পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায় নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরএইচএম/এমআর