আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী পৌরসভার বকুলনেছা মহিলা কলেজ সড়কের সোহেল মিয়ার সাত বছরের শিশু কন্যা মায়েদা নিখোঁজের এক দিন পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয়রা চাওড়া কালিবাড়ী খাল থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। জানাগেছে, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার রাজারহাট গ্রামের ফারুক হোসেন ২০১৫ সালে শিশু কন্যা মায়েদাকেসহ মজিরুন্নেছাকে বিয়ে করে। ওই সময় থেকে শিশু কন্যাকে ফারুক লালন পালন করে আসছেন। বিগত ২০ দিন পূর্বে ফারুক ডেকারেটর কাজে আমতলীতে আসেন। পরে বকুলনেছা মহিলা কলেজ সড়কে লতিফ মোল্লার বাসা ভাড়া নেয়। ওই বাসায় স্ত্রী মজিরুন্নেছা, শিশু কন্যা মায়েদা ও পুত্র শিশু ফরহাদকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে শিশু মায়েদা মা মজিরুন্নেছার সাথে বাসার পাশে চাওড়া কালীবাড়ী খাল পাড়ে যায়। শিশু কন্যা মায়েদা ও দুই বছরের শিশুপুত্র ফরহাদকে রেখে মা ওয়াসরুমে প্রবেশ করে। ওই ফাঁকে শিশু মায়েদা প্রবাহমান খালে পড়ে যায়। মা ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে মায়েদাকে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকে। ঘটনার সময় পালিত বাবা ফারুক হোসেন কাজের সন্ধানে বাহিরে ছিল। পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর লোকজন খবর দেয়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে উদ্ধার চেষ্টা চালায় কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। ওইদিন বিকেলে বরিশাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। ডুবুরী গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে জালাল ও রওশন ওই খালে উদ্ধার অভিযান চালায়। দীর্ঘ চার ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে তারাও ব্যর্থ হয়। শিশু কন্যাকে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে স্বজনরা এবং স্থানীয়দের মধ্যে উৎকন্ঠা বেড়ে যায়। নিখোঁজের একদিন পরে বুধবার দুপুরে ওই খালে শিশুর মরদেহ ফেঁসে উঠে। স্থানীয়রা দেখে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় শহীদুল ইসলাম বলেন, গতকাল থেকে শিশুটিকে খালে খুঁজতে থাকি। কোন সন্ধ্যান পায়নি। বুধবার দুপুরে খালের মাঝে শিশুটির মরদেহ ফেঁসে উঠে। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করেছি।
শিশুর পালিত বাবা মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, ওর মায়ের সাথে মায়েদা ও ফরহাদ খালের পাড়ে যায়। ওই সময় ওর মা পায়খানায় ছিল। পায়খানা থেকে বের হয়ে মায়েদাকে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকে। পরে আমি এসে ওর পায়ের জুতা দেখে শনাক্ত করেছি মায়েদা খালে পড়ে গেছে। একদিন পর ওর মরদেহ খাল থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেছে। তিনি কান্নাজনিত কন্ঠে আরো বলেন, মায়েদাকেসহ ওর মাকে আমি বিয়ে করেছি। গত পাঁচ বছর ধরে ওকে আমি নিজের মেয়ের মত লালন-পালন করে আসছি। ওর বাবার নাম মোঃ সোহেল হাওলাদার।
আমতলী ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মোঃ তামিম হাওলাদার বলেন, বরিশাল থেকে ডুবুরী দল এসে চার ঘন্টা চেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারেনি। শুনেছি শিশুটির মরদেহ ফেঁসে উঠেছে এবং স্থানীয়রা উদ্ধার করেছে।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর