কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
কলপাড়ায় একই পরিবারের নারীসহ ৬ জনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন যুবক নেছার উদ্দীন। তার দায়েরকৃত মামলার আসামীদেরকে স্বাক্ষী বানিয়ে মিথ্যা ছিনতাই মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাণহানীর শংকায় বাড়ীঘর ছেড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জনপ্রতিনিধিসহ সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে। কোন সুফল না পেয়ে ভুক্তভোগী ওই যুবক বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় কলাপাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের ভুক্তভোগী যুবক নেছার উদ্দীন। এসময় তার দাদি আশির্ধো রিজিয়া বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিতি বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ৩১ মার্চ বিকালে আমার বসত বাড়ির উঠানে একটি গাছ জোর পূর্বব কাটতেছিল প্রতিপক্ষ বাবুল জোমাদ্দারসহ সাতজন। উক্ত গাছ কাটায় আমি বাঁধা দিলে তারা আমাকেসহ আমার পরিবারের সবাইকে কুপিয়ে জখম করে। তাদের সবাইকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ফুফাফো ভাই মাহবুবের অবস্থা আংশকাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করে। বিষয়টি বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদ মাসুদ নিজামী আমাদেরকে দেখতে হাসপাতালে আসেন। তারা উভয় পক্ষকে শালিসির মাধ্যমে মিমাংশার আশ^াস দেয়। তাদের আশ^াস পেয়ে আইনের আশ্রয় না নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাই। পরে শালিস বৈঠকের জন্য বার বার মাসুদ নিজামীর স্মরণাপন্ন হলেও তিনি অজ্ঞাত কারনে কোন সালিশ বৈঠক বসাননি। তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে প্রতিপক্ষ বালুল জোমাদ্দারসহ তার দলবল জুলাই মাসের ২০ তারিখ দুপরে ফের আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি নীলগঞ্জ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক মাসুদ নিজামীকে অবগত করলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে বলেন।
পরে শালিস বৈঠকের জন্য আগের অচলনামা তার কাছে ফেরতে চাইলে সে আমাকে একটি ফটোকপি ফেরত দেয়। জুলাই মাসের ২২ তারিখ কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাবুল জোমাদ্দারসহ সাত জনকে আসমি করে একটি মামলা দায়ের করি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফ আইআর নিতে নির্দেশ দেয় এবং কলাপাড়া থানার এস আই আসলাম খানের উপর মামলার দায়িত্ব দেয়।
তার লিখিত বক্তবে তিনি আরো উল্লেখ করেন, দীর্ঘ দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পর ২১ সেপ্টেম্বর বালুল জোমাদ্দার বাদী হয়ে আমাকে আসামী করে আমার মামলার আসামীদেরকে স্বাক্ষী বানিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা ছিনতাই মামলা দায়ের করে। বিজ্ঞ আদালত মামলাটির তদন্তের নির্দেশ দেয় কলাপাড়া থানার এসআই দাউদকে। এসআই দাউদ প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিষয়টি মিথ্যা বলে প্রমানিত হইবে।
নেছার উদ্দীন আরও বলেন, আমার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর কলাপাড়া কামার পট্রি থেকে এসআই আসলামখান বাবুল জোমাদ্দারকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন। বাবুল জোমাদ্দার বর্তমানে পটুয়াখালী জেল হাজতে রয়েছেন। এরপর থেকে আসামিপক্ষ এবং বিভিন্ন কুচক্রি মহলের সহায়তায় প্রকাশ্যে এবং ফোনে আমাকে ও আমার পেিরবারের সদস্যদের মারধর কুপিয়ে খুন জখমের এবং বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে হুমকি দামকি দিতে থাকে। বর্তমানে আমাদের পরিবারের সদস্যর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এবং সরকারে উচ্চ পর্যায়ের দপ্তরের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি তিনি। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়ে তা সম্ভব হয়নি।
কলাপাড়া থানা উপ পরিদর্শক এস আই আসলাম বলেন, বাড়ির সিমানায় বড়ই গাছের ডাল কাটা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের জের ধরে ৬ জন আহত হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি বাবুল জোমদ্দারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এমবি/এমআর