বাবুগঞ্জে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির কর্মশালা

প্রথম পাতা » বরিশাল » বাবুগঞ্জে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির কর্মশালা
বৃহস্পতিবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০


বাবুগঞ্জে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির কর্মশালা

বাবুগঞ্জ (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বাবুগঞ্জে বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনার মহামারি সময়কালীন বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ এবং  জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধে বুধবার উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে দিনব্যাপী ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ওই কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বরিশাল বিভাগীয় শাখার যুগ্ম-সম্পাদক, বিমানবন্দর প্রেসক্লাব সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না। গার্লস অ্যাডভোকেসি অ্যালায়েন্স ও প্লান ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় উপজেলার রহমতপুর ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার মাহামুদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের বরিশাল অঞ্চলের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মোজাম্মেল হক ও রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তারিকুল ইসলাম চৌধুরী।
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশের বাবুগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়কারী আল-আমিন শেখের সঞ্চালনায় কর্মশালায় আমন্ত্রিত অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খানপুরা আলীম মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা জাকির হোসেন, রাশেদ খান মেনন মডেল উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফ হাওলাদার, বাবুগঞ্জ পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহিদা আক্তার, রহমতপুর ইউপি সদস্য জিয়াউল হক, সাদেক খান, জেলানী সাজোয়াল, হেলেনা বেগম রহিমা, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার নাসির উদ্দিন মাহমুদ খান (নান্না কাজী), বিমানবন্দর প্রেসক্লাব সম্পাদক রোকন মিয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আল-আমিন হাওলাদার, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশের ইউনিয়ন সমন্বয়কারী আবু হানিফ ফকির, নারী উদ্যোক্তা ফারাজানা আক্তার, ইয়ুথ লিডার সাজিয়া নুসরাত, ফয়সাল আহমেদ, শাকিল মাহমুদ হৃদয় প্রমুখ। ওই কর্মশালায় বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির ২২ সদস্য ছাড়াও জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের মোট ৩৫ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বরিশাল বিভাগীয় শাখার যুগ্ম-সম্পাদক, বিমানবন্দর প্রেসক্লাব সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, অশিক্ষিত এবং শিক্ষিত উভয় পরিবারের মধ্যেই বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটছে। করোনায় বাল্যবিয়ের প্রবণতা আরও বেড়েছে। অশিক্ষিত পরিবারে দারিদ্র্যতা ও সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে এবং শিক্ষিত পরিবারে মোবাইল-ফেসবুকের কুপ্রভাবে ছেলেমেয়েরা বয়ঃসন্ধিকালেই প্রেমে জড়িয়ে পড়ায় সম্মানহানির ভয়ে অভিভাবকরা বাল্যবিয়ে দিচ্ছেন। তাছাড়া এখন বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে জন্ম নিবন্ধন বা বয়স প্রমাণের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক হওয়ায় রেজিস্ট্রি ছাড়াই কাজী সাহেবরা বাল্যবিবাহ সম্পাদন করছেন। একটি ইউনিয়নে একজন ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কাজী এবং একটি রেজিস্ট্রার (বালাম বই) থাকার কথা থাকলেও কাজীরা ওয়ার্ড ভিত্তিক তাদের একাধিক সহকারী নিযুক্ত করেন এবং তাদের কাছে নকল রেজিস্ট্রার সরবরাহ করেন। কোনো কোনো কাজীর ১৮ থেকে ৩০ জন পর্যন্ত সহকারী তথা দালাল থাকে। তাদের মাধ্যমেই মোটা অংকের টাকা নিয়ে রেজিস্ট্রি ছাড়াই এসব বাল্যবিয়ে সম্পাদন করেন কাজীরা। অনেক ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর অভিভাবকরা জানতেই পারেন না কাজী নিজে আইনি জটিলতা থেকে বাঁচতে বিয়েটা ভুয়া রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে নোটারি পাবলিক থেকে বিয়ের এভিডেভিড তৈরি করে কিংবা মসজিদের ইমাম ডেকেও পড়ানো হচ্ছে বাল্যবিয়ে। এসব ঘটনায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত ও জেল-জরিমানার উদাহরণ সৃষ্টি করতে না পারলে বাল্যবিবাহ কখনো বন্ধ হবে না।

এএ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৫:৪৮ ● ৯৭৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ