গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পানি উন্নয়ন বের্ডের খাল দখল করে কয়েকটি দোকান ঘর তৈরি করতেছিল ওই এলাকার প্রভাবশালিরা। নিজের বাড়ির সামনে পথও দখল করে দোকান তৈরী করছিল দেখে সহকারী কমিশনার (ভুমি) সদরের কাছে গিয়ে অভিযোগ করায় চেয়ারম্যানের ডাকা সালিশ বৈঠকে ১লক্ষ ১০হাজার টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে অভিযোগকারীকে।
ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার ঘোষালকান্দি গ্রামে সহদেব সরকারের ছেলে সুকন্ঠ সরকারের বাড়ির সামনে। সরকারী খাল দখল করে দোকান করতেছিল ওই এলাকার গোলক বালার ছেলে গবিন্দ বালা। বাড়ি থেকে বের হবার একটি বাশের সকো সেটাও ভেঙ্গে ফেলে তারা। যার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে সমস্যা হচ্ছে তাদের। এটা দেখে সুকনন্ঠ চেয়ারম্যান সুবোধ হীরার কাছে গিয়ে বিষয়টি জানান। চেয়ারম্যান এলাকার কিছু গন্যমাণ্য মানুষের কাছে পাঠিয়ে দেয় তাকে।
এলাকার গন্যমাণ্য মানুষের নিকট গেলে কোন সুরাহা না পেয়ে তিনি সহকারী কমিশনার (ভুমি) গোপালগঞ্জ সদরের কাছে গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভুমি) ঘটনাস্থল এসে সরকারী জায়গা থেকে দোকান ঘর তৈরী করা বন্ধ করে দেয় এবং কিছু ঘর উচ্ছেদ করেন।
সুকন্ঠ সরকার অভিযোগ করে বলেন, আমার বাড়ির সামনে ছোট একটি খাল। সেই খালে একটি বাশের সাকো দিয়ে আমি চলাচল করি। আমার প্রতিবেশি গবিন্দ বালা আমার বাড়ি সামনে এসে জোর পূর্বক দোকান ঘর করতেছিল। আমি চেয়াম্যান কে বললে তিনি এলাকার কিছু গন্যমান্য ব্যাক্তির কাছে পাঠিয়ে দেয়।
আমি তাদের কাছে গেলেও তারা আমাকে কোন সুরাহা দিতে না পারায় আমি গোপালগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভুমি) সদরের অফিসে গিয়ে অভিযোগ করি। পরে কমিশনার স্যার এসে কিছু ঘর ভেঙ্গে দেয় ।
তিনি আরও বলেন, আমার অভিযোগে করার কারণে সহকারী কমিশনার (ভুমি) স্যার এসে দোকান ঘর তৈরী করা বন্ধকরে দেয়। আমার অভিযোগর কারনে তাদের ক্ষতি হয়েছে এমন অভিযোগ এনে একটি সালিশিতে আমাকে তাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১লক্ষ ১০হাজার টাকা জরিমানা করে। সালিশিতে সাহাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুবোধ হীরার নেতৃত্বে, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অনুপ কির্ত্তনীয়া, মেম্বার বিনয়, দিলিপ বিশ^াস, অনিমেষ ঘোষ, প্রকাস সরকার, বাবু কির্ত্তনীয়া, মিহির রায়সহ প্রায় ১৫জনের একটি জুরি বোর্ড করে আমাকে ১লাক্ষ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে পরে ১০ হাজার টাকা কমিয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। উক্ত টাকা দেওয়ার জন্য আমাকে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়।
সাহাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুবোধ হীরার বলেন, ওই গ্রামের অনিমেষ ঘোষ এই সালিশির আয়োজন করে এবং উক্ত সালিশিতে আমি ছিলাম কিন্ত জরিমানা সময় আমি ছিলাম না। আমার ভাই অসুস্থ হওয়ার কারনে আমি চলে আসছিলাম। পরে আমি জরিমানাটি বিবেচনা করার অনুরোধ করি।
অনিমেষ ঘোষ বলেন, সালিশিটি চেয়ারম্যান নিজে ডেকেছেন। আমাকে চৌকিদার দিয়ে খবর পাঠায় এবং তিনি নিজেও কয়েকবার ফোন করেন সালিশিতে উপস্থিত থাকার জন্য বলেন। তারই লোকজন থেকে এই জরিমানা করে। তার লোকজন বেশি থাকার করনে আমরা কোন কথা বলতে পারিনি।
সহকারী কমিশনার (ভুমি) গোপালগঞ্জ সদর মো: মনোয়ার হোসেন বলেন, জরিমানার ঘটনাটি আমি শুনেছি এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতিশ রায়কে বলেছি সুকন্ঠ সরকারকে সাক্ষী প্রমানসহ আমাকে জানালে আমি ব্যাবস্থ গ্রহন করবো।
তিনি আরও বলেন, ওই খালটি বিভিন্ন লোকে অবৈধভাবে দখল করে আছে। চেয়ারম্যান সুবোধ হীরা উক্ত খালটি দখলকারীদের তালিকা আমার নিকট দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় নিয়েছে। তিনি তালিকা দিলে খালকিূ দখলমুক্ত করা হবে।
এইচবি/এমআর