স্থাগিতাদেশ অগ্রাহ্য-তালতলীতে মাদ্রাসায় নিয়োগে ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ

প্রথম পাতা » বরগুনা » স্থাগিতাদেশ অগ্রাহ্য-তালতলীতে মাদ্রাসায় নিয়োগে ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ
সোমবার ● ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০


‘তালতলীতে মাদ্রাসায় নিয়োগে ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

হাইকোর্টের স্থাগিতাদেশ অমান্য করে বরগুনার তালতলী উপজেলার তালতলী ছোট ভাইাজোড়া ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির সহায়তা নিয়ে আবদুর রবকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর ছালেহ এ নিয়োগ দিয়েছেন। এ ঘটনার এলাকার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ওই নিয়োগ বাতিল করে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করেছেন।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার তালতলী ছোট ভাইাজোড়া ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগের জন্য গত জুলাই মাসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন অধ্যক্ষ।  ওই বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৬ খানা আবেদন জমা পড়ে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর ছালেহ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ওই মাদ্রাসার করনিক মোঃ আবদুর রবকে নিয়োগের পায়তারা চালায়। এদিকে গত পয়েলা সেপ্টম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের যৌথ বেঞ্চ মাদরাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগার নিয়োগের ওপর চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন মাসের স্থাগিতাদেশ দেন। এতে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আবু জাফর ছালেহ হাইকোর্টের এ আদেশ অমান্য করে তরিগড়ি করে অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় নিয়োগ বোর্ড গঠন করে। এবং তার মাদ্রাসার করনিক আবদুর রবকে ওই পদে নিয়োগ দেন। এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে মাদরাসা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ এর ৩৫ নং কলামে উল্লেখ আছে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদের নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতায় বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড/ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়/ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভূক্ত মাদরাসা সমুহ হতে ফাজিল এবং গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা অথবা কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে আরবী বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রি ও গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা পাশ হতে হবে। এবং বয়সের ক্ষেত্রে অনুর্ধ্ব ৩৫ বছর তবে সমপদে ইনডেক্সধারীদের জন্য বয়সসীমা শিথিল যোগ্য। কিন্তু অধ্যক্ষ এমপিও নীতিমালা লঙ্ঘন ও মেধাবী প্রার্থী থাকলেও তাদের বাদ দিয়ে নাম সর্বস্ব একটি বিশ^ বিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে পাশ করা তার মাদ্রাসার করনিক মোঃ আবদুর রবকে নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী গ্রন্থাগার আবদুর রব ছুটি না নিয়ে বেতন ভাতা ভোগ করে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে অধ্যয়ন করেছেন। যা নিয়ম বর্হিভুত।
এ বিষয়ে আবদুর রব বলেন, গত ২ সেপ্টম্বর বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে আমাকে সহকারী গ্রন্থাগার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয় ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর মোঃ ছালেহ’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন  ধরেননি।
মাদরাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আলম হাওলাদার বলেন, হাইকোর্টের স্থাগিতাদেশের খবর পেয়ে সহকারী গ্রন্থাগার পদে আবদুর রবকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দেয়া ও যোগদান পত্র গ্রহন বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাদাত হোসেন তার মুঠোফোনে বলেন,২ সেপ্টেম্বর মাদরাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগার নিয়োগের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। যিনি প্রথম হয়েছেন তাকে নিয়োগ দেয়ার জন্য ম্যানেজিং কমিটিকে সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু এ সময় হাইকোর্টের স্থাগিতাদেশের খবর পাইনি। পরক্ষনে খবর পেয়েছি। হাইকোর্টের আদেশের ওই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে দেয়া হবে।
হাইকোর্টের আইনজীবী সৈয়দ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সাধারণ ধারার শিক্ষার্থীদের এক রিটের প্রেক্ষিতে গত ১ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের যৌথ বেঞ্চ মাদরাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগার নিয়োগের ওপর চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন মাসের স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। এই আদেশ জারির পরে সকল নিয়োগ স্থাগিত হয়ে গেল। যারা এরপর নিয়োগ দিবেন তা অবৈধ।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৫:০২ ● ৫৩৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ