কলাপাড়া(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের সোমবারের বাজার সংলগ্ন দক্ষিন চালিতাবুনিয়ার চরলতা খেয়াঘাটি সরকারের নির্ধারিত ভাড়া চেয়ে দশগুন ভাড়ায় বেশি নিচ্ছে বলে আভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রকাশ্যে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে খেয়া ইজারাদার ও পরিচালনায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ। জিম্মি হয়ে পরেছে খেয়া পারাপার হওয়া কয়েক হাজার যাত্রী। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিবে বলে আশা করছেন সাধারন যাত্রীরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ধানখালী ইউনিয়নের সোমবারের বাজার সংলগ্ন চরলতা খেয়া (দক্ষিন চালিতাবুনিয়া খেয়া নামে পরিচিত) কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলার জনসাধারন যাতায়ত করে থাকে। এ খেয়ায় সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকার চেয়ে অতিরিক্ত দশগুন ভাড়া আদায়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। ২০১৫ সালের সরকারি তালিকানুযায়ী মানুষ জনপ্রতি ভাড়া ৩ টাকার স্থলে আদায় হচ্ছে ৫০ টাকা, চালকসহ মটরসাইকেল (প্রতিটি) ১২ টাকার বদলে নেয়া হচ্ছে ১০০ টাকা, গরু/মহিষ (প্রতিটি) ৭টাকার বদলে নিচ্ছে ১০০ টাকা। এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। রাতের বেলায় এ ভাড়া আরো বৃদ্ধি করে তাদের ইচ্ছেমত আদায় করা হয়।
রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চিনাবুনিয়া গ্রামের এক যাত্রী রুনু বেগম জানান, আমি নিয়মিত এ খেয়া দিয়ে পারাপার হই। আসতে ৫০ টাকা ও যাইতে ৫০ টাকা করে দেই। আমরা জানি সরকারি তালিকার ভাড়া আরোও কম কিন্তু কি করবো, ৫০ টাকা করে না দিলে খেয়া পার হতে পারি না। এনিয়ে অনেকবার প্রতিবাদ করা হলেও কোন কাজে আসেনি। চালিতাবুনিয়ার পানপট্টি গ্রাম থেকে আসা যাত্রী কহিনূর বেগম, উত্তর চালিতাবুনিয়ার যাত্রী মো. আল-আমিনসহ একাধিক যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে অভিযোগ করেন। অথচ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। জানা যায়, দুটি উপজেলার সংযোগ পথ হিসাবে এ খেয়াটি পটুয়াখালী জেলা পরিষদের মাধ্যমে ইজারা দেয়া হয়। বিগত ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ভাইয়ের ছেলে খোকার নামে এটি ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারারাদারের পক্ষে বর্তমানে আনছার, শাহারুল ও দেলোয়ার খেয়া পরিচালনা করছে বলে জানা যায়।
খেয়া পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত দেলোয়ার জমাদ্দার (দেলা)’র ছেলে খেয়ার মাঝি শফিকুল জমাদ্দার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ পথে যাত্রী কম হয়ে থাকে। তাই আমরা মানুষ জনপ্রতি ৫০ টাকা, মটর সাইকেল ও গরু/মহিষ ১০০ টাকায় পারপার করে থাকি। তবে, যাত্রী কম বলে খেয়ার ইজারাও কম নেয়া হয়েছে তাহলে কেনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হবে এ প্রশ্নের উত্তরে তাকে নিরব থাকতে দেখা যায়।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মাদ শহিদুল হক বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি অবগত হলাম। এবিষয়ে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে পটুয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, যদি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকে তাহলে তারা অন্যায় করছে। এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসকেআর/এমআর