পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পিরোজপুরে বৃষ্টি ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তা, মাছের ঘের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ, বাড়ির আঙিনাসহ সবজি ক্ষেত ও বাগান তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে, জেলার ৭টি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সন্ধ্যা, কচা, বলেশ্বর কালিগঙ্গা, মধুমতি, ও তালতলা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের পানির চেয়ে ২/৩ ফুট বেশি হয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো অতিরিক্ত জোয়ার ও দুদিনের বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার কাউখালী উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রাম, নাজিরপুরে ১৫, ইন্দুরকানী উপজেলার ১০টি, মঠবাড়িয়া উপজেলার ৫/৬টি, ভান্ডারিয়া উপজেলার ১০টি, সদর উপজেলার ৫/৬টি , নেছারাবাদ উপজেলার ৫/৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে জেলার কাউখালী উপজেলার দক্ষিন ও উত্তর বাজার, উজিয়ালখান, আসপর্দ্দি, কচুয়াকাঠী, জয়কুল, বাশুরী, আমরাজুড়ী, কুমিয়ান, সোনাকুর, পাঙ্গাশিয়া, জোলাগাতী, সুবিদপুর, আশোয়া, জব্দকাঠী, শির্ষা, রগুন্থাপুর, বেকুটিয়া, ধাবড়ী, গন্ধর্ব, বিড়ালজুড়ী, ডুমজুড়ী, গুচ্ছগ্রাম সহ উপজেলার ৩০টি গ্রাম। ইন্দুরকানী উপজেলা নদী তীরবর্তী কালাইয়া, পূর্ব ইন্দুরকানী, খোলপতুয়া, ট্যাংরাখালী, চন্ডিপুর, সাউদখালী, চরবলেশ্বর, পাড়েরহাটের আবাসন এলাকা, চরখালী ফেরিঘাট। ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী, হরিনপালা, বোতলা, ঝুনিয়া, নদমুলা,হ্যাতালিয়া, দারুল হুদা। সদর উপজেলার কলাখালী , হুলারহাট ও বেকুটিয়ার নদী তীরবর্তী এলাকা, জুজখোলা। নাজিরপুর উপজেলার খলনি, কাশ্মির, মুনিরাবাদ, পাতাখালী, সাচীয়া, ঝনঝনিয়া, পূর্বকালিকাঠী, মধুরাবাদ, কাছিচিড়া মনোহরপুর, পদ্মডুবি, দেউলবাড়ি, সোনাপুর, উত্তর গাওখালী, উত্তর পাকুরিয়া। নেছারাবাদ উপজেলার আরামকাঠী, কামারকাঠী, জগন্নাৎকাঠী, সদর, জলাবাড়ি, আটঘর কুরিয়ানার কিছু অংশসহ নয়-১০টি গ্রামে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। মঠবড়িয়া উপজেলার পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে জোয়ারের পানি উঠলেও ভাটার সময় তা নেমে যায়। তবে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা হয় না। ফলে স্থানীয়দের খুব বেশি ভোগান্তি হচ্ছে না।
জেলার কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মনু জানান, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে সবজি ক্ষেতসহ মাছের ঘেরের বেশ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যেকোনো ক্ষতি বা পানিবন্দি পরিবারকে সব রকম খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও ছোট খাট সাহায্য দিতে প্রস্তত আছি।
কাউখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফনী ভূষন পাল জানান, জোয়ারে পানি বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করে ইতোমধ্যে উপজেলার মৎস্য চাষিদের তাদের মাছের ঘেরের রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলা হয়েছে। মৎস্য চাষিদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়াসহ তদারকি করা হচ্ছে।
আরএইচএম/এমআর