আমতলীতে বাল্য বিয়ে, জড়িতদের বিচার দাবি

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে বাল্য বিয়ে, জড়িতদের বিচার দাবি
শনিবার ● ১৫ আগস্ট ২০২০


আমতলীতে বাল্য বিয়ে সম্পন্ন, জড়িতদের বিচার দাবি

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনার আমতলী উপজেলার গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী জান্নাতির বাল্য বিয়ে শুক্রবার রাতে সম্পন্ন হয়েছে। জান্নাতির বাল্য বিয়ে হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী এ বাল্য বিয়ের সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করছেন।
জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের আলী মাতুব্বরের কন্যা জান্নাতি গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেনীতে লেখাপড়া করছে। ওই মেয়েকে বাবা আলী মাতুব্বর পার্শ্ববতী গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী গ্রামের মফেজ হাওলাদারের ছেলে পটুয়াখালী ডায়াবেটিস হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী (এমএলএসএস) মোঃ রেজাউল হাওলাদারের সাথে বিয়ের কথা পাকা হয়। শুক্রবার উভয় পক্ষের সম্মতিতে পশ্চিম গাজীপুর মোল্লা বাড়ী জামে মসজিদে স্থানীয় বিবাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা ফোরকান মিয়া দুই লক্ষ ৫০ হাজার টাকা কাবিনে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। রবিবার কনে জান্নাতিকে তার বাবার বাড়ী থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে বর পক্ষ তুলে নেওয়ার দিনক্ষন ঠিক করেছেন। সপ্তম শ্রেনীতে পড়–য়া কন্যার বাল্য বিয়ে হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা এ বাল্য বিয়ের সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করছেন।
ওই বিয়েতে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, বিবাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা মোঃ ফোরকান মিয়া দুই লক্ষ ৫০ হাজার টাকা কাবিনে সপ্তম শ্রেনীতে স্কুল পড়–য়া  জান্নাতির বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছেন। ওই বাল্য বিয়ে অন্যায়। তদন্ত সাপেক্ষে বাল্য বিয়ের ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করছেন তারা।
বর মোঃ রেজাউল হাওলাদারের খালু মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, রেজাউলের সাথে আলী মাতুব্বরে কন্যা জান্নাতির বিয়ে হয়েছে। কিন্তু মেয়ের বয়স হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা।
বর রেজাউল হাওলাদার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার স্ত্রী জান্নাতি গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনীতে পড়ে।
এ বিষয়ে জান্নাতির বাবা আলী মাতব্বরের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বাল্য বিয়ে সম্পন্ন কারী বিবাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা মোঃ ফোরকান মিয়া বলেন, মোল্লা বাড়ী জামে মসজিদে জান্নাতির জন্ম সনদ দিয়ে বিয়ে হয়েছে কিন্তু ওই বিয়ের কাজ আমি সম্পন্ন করিনি।
গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিদ্দিুকর রহমান বলেন, জান্নাতি আমার স্কুলের সপ্তম শ্রেনীর নিয়মিত ছাত্রী। বিদ্যালয় বন্ধের আগেও ক্লাস করেছে। ওতটুকু মেয়ের বাল্য বিয়ে মেনে নেয়া যায় না।
আমতলী গাজীপুর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) মোঃ সুলতান হোসেন সিকদার বলেন, এ বিষয় খোজ খবর নিয়ে উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, বাল্য বিয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৫:৫২ ● ৬৪৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ