বাউফল(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর বাউফলে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে
সফলভাবে মাছ চাষের মধ্য দিয়ে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উম্মোচন করেছেন উপজেলার বগা ইউনিয়নের চাঁদপাল গ্রামের মৎস্য চাষী মো. জাহিদুল হাসান শফিক।
নতুন এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার পিছনে আগ্রহ, কারিগরি জ্ঞান, খামারের বর্তমান অবস্থার কথা জানান জাহিদুল ইসলাম শফিক।
২০১৬ সালের দিকে প্রতিবেশী দেশ ভারতে ঘুরতে গিয়ে প্রথম পরিচিত হন বায়োফ্লক পদ্ধিতে মাছ চাষ সম্পর্কে। অল্প জমিতে স্বল্প খরচে অধিক পরিমানে মাছ চাষের এই পদ্ধতি দেখে দারুনভাবে আকৃষ্ট হন তিনি। এরপর দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের কারিগরি জ্ঞান অর্জন করেন। ২০১৮ সালে ঢাকায় পরীক্ষামূলকভাবে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে প্রথম মাছ চাষ শুরু করেন। সফলতা পাওয়ায় ২০১৯ সালে বাউফল উপজেলার বগা ইউনিয়নের চাঁদপাল গ্রামে নিজ পৈত্রিক বাড়িতে মাত্র ৪শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন খামার বাড়ী বায়োফ্লক হ্যাচারী।
বর্তমানে তাঁর হ্যাচারীতে ৫০হাজার লিটার ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি চৌবাচ্চা ও ১০হাজার লিটার ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন আরো তিনটি চৌবাচ্চায় মাছ চাষ করছেন তিনি। নিয়মিত অক্সিজেন ও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রয়েছে নিজস্ব ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে এই হ্যাচারীটি তৈরী করতে তার ব্যায় হয়েছে মাত্র ৫লাখ টাকা। মাত্র চার শতক জমিতে তৈরী এই মৎস্য খামার থেকে শফিক এখন প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় ২লাখ টাকা আয়। লাভের মুখ দেখতে পাওয়ায় আরো ৩৫শতক জমি এই মৎস্য হ্যাচারীর আওতায় আনার কাজ শুরু করেছেন তিনি। প্রথম দিকে স্থানীয়রা শফিকের এই কাজ কে পাগলামি বলে তাচ্ছিল্য করলেও বর্তমানে শফিকের এই খামারটি দেখতে আসছেন অনেক দূর দুরান্তের মানুষ। শফিকের বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ আশা জাগাচ্ছে স্থানীয় বেকার যুবকদের মধ্যে। নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং সহজ ঋন সুবিধা পেলে এই সেক্টরটি সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। মৎস্য চাষী শফিক স্বপ্ন দেখেন এক সময়ে এই খামার থেকে উৎপাদিত মাছ বিদেশে রপ্তানি করতে পারবেন তিনি। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে একই জমিতে পুকুরের ঘনত্বের থেকে ১০গুন বেশি মাছ উৎপাদন করা সম্ভব। অত্যন্ত কম পরিশ্রমে অধিক লাভ হয় এ পদ্ধতিতে। বৈজ্ঞানিক এই পদ্ধতিতে চাষ করা মাছ খেতে অত্যন্ত সুস্বাদুও বলে জানান তিনি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশে বায়োফ্লক পদ্ধিতে মাছ চাষ নতুন। আমরা শুনেছি বাউফলে এই পদ্ধিতে মাছ চাষ শুরু হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য তারা কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। যোগাযোগ করলে আমাদের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগীতা থাকবে।

এসএস/এমআর