আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ঘর তুলতে চাঁদা না দেওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ শাহ আলম হাওলাদার ও তার স্ত্রী বিউটি বেগমকে যুবলীগ নেতা মোঃ সোহেল মিয়া ও তার লোকজন মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত সেনা সদস্য ও তার স্ত্রীকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার (২২ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের হাজারটাকা বাঁধ এলাকায়।
জানাগেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গেরাবুনিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য শাহ আলম হাওলাদার পাশর্^বতী কুকুয়া ইউনিয়নের হাজারটাকা বাঁধ এলাকার আইউব হাওলাদারের জামাতা। শ^শুর আইউব হাওলাদার জামাতা শাহ আলম ও তার মেয়ে বিউটি বেগমের কাছে ২০০৩ সালে ৬৬ শতাংশ জমি দলিল মুলে বিক্রি করেন। ওই জমি তারা ১৯ বছরধরে ভোগদখল করে আসছে। গেলবছর হাজার টাকা বাঁধ এলাকার ওই জমিতে ঘর তোলার জন্য মাটি দিয়ে ভরাট করে সেনা সদস্য। ওই সময় যুবলীগ নেতা সোহেল মিয়া ও তার সহযোগীরা সেনা সদস্যের কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। কিন্তু ওই টাকা দিতে রাজি হয়নি সেনা সদস্য শাহ আলম হাওলাদার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কথিত যুবলীগ নেতা ও তার লোকজন তাকে গেল বছর ঘর তুলতে দেয়নি। বুধবার ওই জমিতে সেনা সদস্য ঘর তুলতে যায়। এ সময় তার কাছে যুবলীগ নেতা পুরনায় চাঁদা দাবী করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন যুবলীগ নেতা ও তার লোকজন। সেনা সদস্যকে রক্ষায় তার স্ত্রী বিউটি বেগম এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করেছে তারা। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আনেস মৃধা, বশির মৃধা, জসিমসহ কয়েকজন বলেন, সেনাসদস্য শাহ আলম তার জমিতে ঘর তুলতে গেলে সোহেল, মিজানুর ও খোকনসহ কয়েক জনে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারধর করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, হাজারটাকা বাঁধ এলাকায় কেউ ঘর তুলতে গেলেই সোহেলকে চাঁদা দিতে হয়। সোহেলকে চাঁদা না দিয়ে কেউ ঘর তুলতে পারেনা। সোহেল যুবলীগ নেতার পরিচয় দিয়েই নানাবিধ অপকর্ম করছে।
আহত সেনা সদস্য মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, আমার জমিতে ঘর তুলতে গেলে কথিত যুবলীগ নেতা সোহেল মিয়া তার সহযোগী মিজানুর ও খোকনসহ ৬-৭ জনে আমার কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। ওই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা সোহেল মিয়া চাঁদা দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, সেনা সদস্য সরকারী খাস জমিতে ঘর তুলতে গেলে আমরা বাঁধা দিয়েছি। এ সময় তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে মাত্র।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র বলেন, সেনা সদস্য ও তার স্ত্রীর শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর