কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের চড় বালিয়াতলী গ্রামে নিজ সন্তানের নামে ক্রয়কৃত সম্পত্তির ভোগদখল বুঝে পাওয়ার জন্য সমাজের বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পরেছে দুই সন্তানের জননী হোসনেয়ারা বেগম (৩২)। শশুড়বাড়ীর লোকজনের রোষানলে পড়ে নিজের জমি থাকতেও অবুঝ সন্তান নিয়ে অতভাগা হোসনেয়ারা বেগমকে অন্যের বাড়িতে আশ্রিত থাকতে হচ্ছে। তিনি তার সম্পত্তি সঠিকভাবে বুঝে পেতে চান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট বালিয়াতলী গ্রামের ফজলে খন্দকারের পুত্র মোস্তফা খন্দকারের সাথে চৌদ্দ বছর আগে হোসনেয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে দুই সন্তানের জননীও হন তিনি। হোসনেয়ারা বেগম তার নানা বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে ফুফু শাশুড়ির পাওয়া পৈত্রিক সম্পত্তি হতে ১০ শতাংশ সম্পত্তি দুই সন্তানের নামে ক্রয় করেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা সেখানে বসবাসও করছিলেন। তাদের সংসার ভালভাবেই চলছিল হঠাৎ করে স্বামী মোস্তফা খন্দকার আরেকটি বিবাহ করে অন্যত্র পালিয়ে য়ায়। দুই সন্তান নিয়ে খুব অসহায় হয়ে পরে হোসনেয়ারা বেগম । তিনি তার স্বামীর নামে আদালতে একটি মামলা করেন। অনেকদিন পর তার খোঁজ পাওয় গেলেও প্রথম স্ত্রীর সম্মতি ব্যতিত দ্বিতীয় বিবাহ করায় তার সাজা হয়। এতে হোসনেয়ারা বেগম শশুড়বাড়ির লোকদের চরম রোষানলে পড়েন। তারা তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করতে থাকে।
হোসনেয়ারা বেগমে বলেন, সন্তানদের নামে ক্রয়কৃত সম্পত্তি হতে আমাকে বিতারিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পায়তারা চালাচ্ছে। আমি নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট নালিশ করি। তিনি শালিস করে আমাকে সম্পত্তি ভোগদখলের অধিকার দিতে বললেও আমার শশুড়বাড়ীর লোকজন তা মানতে নারাজ। সর্বশেষ গত রবিবার আমি জমিতে ঘড় তুলতে গেলে আমার শশুড় ফজলে খন্দকার, দেবর সোহেল ও নিজাম আমাকে বাঁধা দেয়। তারা ঘড়ের খুঁটিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি উপড়ে পাশের একটি ডোবায় ফেলে দেয়। তিনি আরোও অভিযোগ করে বলেন, আমার শশুর ও দেবররা মিলে আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে আমাকে থাকতে দিচ্ছে না। আমি আমার সম্পত্তির সঠিক বুঝ চাই যাতে আমার সন্তানদের নিয়ে থাকতে পারি।
কলাপাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হস্তক্ষেপে আগামী শুক্রবার হোসনেয়ারা বেগমের জমি বুঝিয়ে দিবে বলে তার শশুড়বাড়ির লোকজন স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানা যায়।
এবিষয়ে হোসনেয়ারা বেগমের শশুড় ফজলে খন্দকার তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, হোসনেয়ারা বেগমের সম্পত্তিতে আমরা কেহ বাধা দেইনি, সব মিথ্যা ও বানোয়াট।
বালিয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি শালিস করেছিলাম। অসহায় হোসনেয়ারা ও তার সন্তানদের সম্পত্তির বুঝ দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে বলেছিলাম। কিন্তু হোসনেয়ারা বেগমের শশুড়বাড়ীর লোকজন আমার কথা না শুনে তার উপর অন্যায় করছে।
এবিষয়ে কলাপাড়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শশুড় ও পুত্রবধুর মধ্যে জমি-জমা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। আগামী শুক্রবার স্থানীয় মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি সুরাহা করার পরামর্শ দিয়েছি। অন্যথায় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এসকেআর/এমআর