সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির দৃষ্টান্ত-কলাপাড়ায় মসজিদ ঈদগাহের পাশাপাশি রাখাইন সমাধি

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির দৃষ্টান্ত-কলাপাড়ায় মসজিদ ঈদগাহের পাশাপাশি রাখাইন সমাধি
সোমবার ● ১৩ জুলাই ২০২০


কলাপাড়ায় মসজিদ ঈদগাহের পাশাপাশি রাখাইন সমাধি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির দৃশ্যমান বিরল উদাহরণ পাওয়া গেছে। মুসলমানদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদের সামনে রাখাইন সম্প্রদায়ের দুটি কবর রয়েছে সাম্প্রদায়িকতার অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্বরুপ।
জানা যায়, উপজেলার ধূলাসার ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড চর ধূলাসার গ্রামে একসময় রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করতো। সময়ের পরিক্ষমায় এ অঞ্চলে মুসলমানদের বসতি গড়ে ওঠে। সেসময় চর ধূলাসার বড় জামে মসজিদ, ঈদগা মাঠ, চর ধূলাসার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা’র করার জায়গা দান করেন রাখাইন সম্প্রদায়ের লাইছা নামের এক ব্যক্তি।
১৯৬৫ সনের বন্যায় রাখাইন লাইছা ও তার স্ত্রী মেরী দম্পত্তি ২জন মারা যায়। পরে ওই দম্পতির সন্তানরা মসজিদের সামনেই তাদের সমাধী করে বাধিঁয়ে রাখে। সমাধীর পশ্চিমে চর ধূলাসার বড় জামে মসজিদ, উত্তরে চর ধূলাসার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, পূর্বে ঈদগা মাঠ রয়েছে। এগুলো দেখা-শুনার পাশাপাশি ওই দম্পতির কবরও দেখাশুনা করে রাখছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর মতে, আমরা মুসলমানরা এ রাখাইনদের কবর দেখাশুনা করে রাখি। আমাদের মধ্যে কোন মারামারি কাটাকাটি নাই। এখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান আমরা একত্রে সুশৃঙ্খল ভাবে বসবাস করে আসছে। সাড়া বিশ্বের অন্যান্য ধর্মালম্বীরা যেখানে মুসলমানদের উপর অত্যাচারে লিপ্ত রয়েছে সেখানে আমরা বাংলাদেশীরা একত্রে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি। ইসলাম ধর্ম একটি শান্তির ধর্ম। তাই আমরা সংঘাত নয় সাড়া বিশ্বের শান্তি কামনা করছি।
চর ধূলাসার বড় জামে মসজিদ এর  ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. আব্দুর রহমান জানান, আমাদের এই মসজিদের সামনে লাইছা ও মেরী দম্পত্তির ২টি কবর আছে। এই কবরের যাতে সম্মান রক্ষা হয় এজন্য ইসলামী শিক্ষা অনুযায়ী দেখাশুনা করছি।
কলাপাড়ার ধর্মসুখ বৌদ্ধ বিহার’র সুন্দারা ভিক্ষু জানান, ওখানে রাখাইন পাড়া ছিলো এটা আমরা জানি। ১৯৬৫ সনের বন্যায় অনেক রাখাই মারা গেছে। ওখানে রাখাইনদের কবর আছে। ওখানকার কবরগুলো মুসলমানরা আপন মনে করে দেখাশুনা করছে। এটা শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব। বিশ্বের বর্তমান পেক্ষাপটে এটি ধর্ম নিরাপক্ষতার একটি  উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, এ উপজেলায় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সংস্কৃতির লোক বসবাস করে। এরমধ্যে অন্যতম ধর্মালম্বীর লোক হলো রাখাইন। আমাদের এ কলাপাড়ায় কোন সাম্প্রতায়িক সমস্যা নাই বরং সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি আছে।

এসকেআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৫:৫৮ ● ৪১০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ