সোয়া চার কোটি টাকার অপচয় নেছারাবাদে দেড়’শ মিটারের মধ্যে আবারও ব্রীজ !

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » সোয়া চার কোটি টাকার অপচয় নেছারাবাদে দেড়’শ মিটারের মধ্যে আবারও ব্রীজ !
মঙ্গলবার ● ৩০ জুন ২০২০


সোয়া চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন এলজিইডির কাজ চলছে।

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংগল বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বের খালের উপর প্রায় সোয়া চার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৩ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করছে এলজিইডি। অথচ মাত্র দেড় থেকে ২শ‘ মিটারের ব্যবধানে একই খালের উপর সড়ক বিভাগের একটি বেইলী ব্রিজ চালু রয়েছে। ইউনিয়ন সড়কের সংযোগ দেয়ার অজুহাতে অপ্রয়োজনীয় একটি ব্রিজ নির্মাণ করায় সরকারের চার কোটি ১৪ লাখ টাকার বেশি অপচয় করা হচ্ছে। খালের ত্রিমোহনায় নির্মানাধীন ওই ব্রিজের দক্ষিণ পাড়ে মাত্র ৩/৪ শ‘ ফুট সরু মাটির রাস্তার পাশে কোনো বসত বাড়ি নেই। মানুষের যাতায়াতও নেই ওই রাস্তায়। ছোট্ট ওই বাজারের মধ্যের সড়ক দিয়ে মানুষ বেইলী ব্রিজ পার হয়ে যাতায়াত করে থাকেন। টি এন-এ এস আই (জেবি) নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজ নির্মানের প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করার পর মানুষ জানতে পারে এবং তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়। ব্রিজের নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে চার কোটি ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৩৯ টাকা। এদিকে ওই বাজারের উত্তর পার্শ্বে রাজবাড়ি খেয়াঘাটে যাতায়াতের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের খালের উপর একটি জরাজীর্ণ আয়রণ ব্রিজ রয়েছে। যা মেরামত বা পুনঃনির্মানের উদ্যোগ নেয়নি এলজিইডি। খেয়াঘাটে যাতায়াতের অতি প্রয়োজনীয় ব্রিজটি নির্মাণ না করে গুরুত্বহীন জায়গায় ৪ কোটি টাকার ব্রিজ তৈরী করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে।
জানাগেছে স্বরূপকাঠি পিরোজপুর সড়কের পাশে সেহাংগল একটি ছোট বাজার। ওই বাজারের খালের উপর সড়ক বিভাগের একটি বেইলী ব্রিজ দিয়ে গত ১৫ বছর যাবত যানবাহন চলাচল করছে। সড়ক বিভাগ ওই জায়গায় পাকা ব্রিজ নির্মানের জন্য প্রক্কলন তৈরীসহ টেন্ডার আহবানের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সড়ক বিভাগের রাস্তা চালু হওয়ার আগে বাজারের পশ্চিম পাশের মাটির রাস্তা দিয়ে মানুষ যাতায়াত করত। সেভাবেই রাস্তাটি ইউনিয়ন সড়ক হিসেবে এলজিইডির আইডিভুক্ত হয়। ওই স্থানে ব্রিজের গুরুত্ব বিবেচনা না করেই এলজিইডিটেন্ডার আহবান করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়। সমদেয়কাঠি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্পাদক মো.হুমায়উন বেপারী বলেন, বাজারের ৫/৭ জন দোকানী ও পার্শবর্তী বাড়ীর ২/৪ জন মানুষ দক্ষিন পাড়ের মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া ছাড়া ওই খানের পুলের প্রয়োজন পরেনা। তিনি বলেন ওই জায়গায় একটি লোহার পুল ছিল। যা মেরামত করলেই যথেষ্ট হতো। এ বিষয় এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মীর আলী শাকির বলেন, ওই জায়গায় গার্ডার ব্রিজ নির্মানের প্রস্তাব তার আগের অফিসারার দিয়েছেন। তিনি বলেন তিনটি খালের ভাঙ্গন কবলিত মোহনা এবং দক্ষিন পাড়ে মসজিদ থাকায় ব্রিজের এ্যাপ্রোস সড়ক করা জটিল বলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
এ বিষয় এলজিইডির পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুশান্ত  কুমার রায় সাগরকন্যাকে জানান, তিনি আগামী সপ্তাহে (জুলাইর প্রথম) ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন, সে পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের ঠিকাদার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এমআরএ/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩৩:৪০ ● ৫৫৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ