চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চরফ্যাশন উপজেলা দুলার হাটের আহাম্মদপুর ইউনিয়ন ফরিদাবাদ ৯ নং ওয়ার্ডের তেতুঁলিয়া নদীর উপর বয়ে যাওয়া লম্বা খালটির উপর বাধেঁর ফলে ডুবে গেছে বাগান। কৃষকের ধান ও রবিশষ্য বিনষ্ট হচ্ছে। এতে দু‘শ পরিবার পানি বন্ধির আশংকারও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঐতিহ্য বাহী এ খালটির পানির মোহনার উজানে ভেসে বেড়াতো এক সময় পালতোলা নৌকা, বানভাসী পলিমাটি কাঁদায় প্রায় ১৫০ একর জমিতে ফলাতো ফসলী ধান ও রবিশষ্যের কৃষকের পরিবারের মুখে ফুটত হাসি। ওই খালে চিংড়ি, শোল, বোয়াল, ছোট মলামাছ গ্রাম্য ছেলে মেয়ে এবং বেহুন্দিজালের মাছ ধরার দৃশ্য বর্ণনা দিতে গিয়ে এলাকার শাহে আলম মাঝি স্মৃতি চারনে ভেসে আসে কবি বন্দে আলী মিয়ার কবিতা ” আমাদের ছোট গায়ে ছোট ছোট ঘর। থাকি সেথায় সবে মিলে নাহি কেহ পর! আর এখন বানভাসী অঞ্চলে পরিনত হয়েছে। একে অপরের সাথে দ্বন্দ আর হুমকী ধামকিতে বাঁধ দেওয়া ও ভুক্তভোগী দু’টি গ্রুপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
প্রবল বর্ষণের ফলে এখানে প্রায় ২০০ টি পরিবার দুর্বিসহ জীবযাপন করছেন। এ অঞ্চলে খরা মৌসুমে রবিশস্য আর বর্ষাকালে বোরো ধানের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হচ্ছে কৃষকদেরকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অবাদী ও অনাবাদী, ফলফলাদি, কাঠও সবজি বাগানে বৃষ্টির পানিতে বাগ বাগিচা তলিয়ে রয়েছে। পানি জমে থাকায় পচাপানির দুর্গন্ধ মশা, মাছিতে নানান রোগ বালাইয়ের প্রাদুর্ভাব ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। ভুক্তভুগী মোঃ নুরনবী, নজরুল ইসলাম,আঃ বারেক ও মোঃ দুলাল সহ গ্রামের কৃষক ও শ্রমজীবীদের দাবী অচিরেই তেঁতুলিয় নদী দিয়ে প্রবাহিত এ লন্বা খালটির প্রায় ১০ টি বাঁধ খুলে না দিলে তাদের এ দুর্বিসহ জীবনে নেমে আসবে অন্ধকার।
মোঃ মোস্তফার ছেলে মোঃ অলি, আঃ মোতালেবের ছেলে মোঃ আমীর হোসেন, হাকিম আলী ছেলে ইউসুফসহ আরো অনেকে এ খালের উপরে বাঁধ দেওয়ার ব্যাপারে মোঃ আলী বলেন, বাঁধ কাটা হবে সকলে কাটলে তিনিও কাটবেন । ওই এলাকায় সাধারণ কৃষক ও দিন মজুরদের কথা ভাবেনা কেউ। তিনি বলেন, খালের দু’ পাশেই আমাদের জমি বাঁধ দিয়েছি।
তাছাড়া ভুক্তভুগিরা জানান, কিছুদিন পুর্বে নির্বাহি অফিসারকে অবগত করলে এলাকার আহম্মদপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ফখরুল ইসলামকে বিষয়টি ফয়সালার করার জন্যে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। চেয়ারম্যান তিনদিনের মধ্য বাঁধ সরানোর নির্দেশ করেন। শনিবার ৩দিন শেষ হয়েছে। রবিবার (২৮ জুন) এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি সমাধান হয়নি বলে স্থানীয়রা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হাছনাইন বলেন, চাষাবাদের ধান রবিশস্য ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমরা প্রশাসনকে অবগত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। আহম্মদপুর খালের বিষয় নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
এ ব্যপারে চরফ্যাশন উপজেলা কমিশনার(ভুমি) মোঃ শাহীন মাহমুদ বলেন অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিব। চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণে ইউপির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করেছি। পরবর্তীতে আইনানুগব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএইচ/এমআর