বাউফল (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর বাউফলে আমন আবাদে দেখা দিয়েছে তীব্র বীজ সঙ্কট। কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী বীজ ধান সরবরাহ করতে পারছেন না বিএডিসির ডিলাররা। অপর দিকে জৈষ্ঠ্য মাসের শেষে এবং আষাঢ় মাসের শুরুতে টানা বর্ষনে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে এই তীব্র বীজ সঙ্কট।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বাউফল উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬হাজার ২শ মেট্টিক টন। এর মধ্যে উফসী জাতের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭হাজার হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কেবল উফসী জাতের আমন আবাদে প্রয়োজন ৩শ মেট্টিক টন বীজ ধান। সেখানে বিএডিসি সরবরাহ করেছে মাত্র ৩০মেট্টিক টন। সব মিলিয়ে বীজ ধানের এই সঙ্কট যদি এখনই মেটানো না যায় তাহলে উপজেলা জুড়ে বিপুল পরিমান কৃষি জমি অনাবাদী থাকতে পারে বলে মনে করছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
বাউফল উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোসিঙ্গা গ্রামের কৃষক রাজ্জাক চৌকিদার জানান, তুলনামূলক একটু নিচু জমিতে এ বছর যারাই বীজতলা তৈরী করেছেন, সকলের বীজতলাই পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। এরপর আর বীজধান না থাকায় অনেকেই দ্বিতীয়বার বীজতলা তৈরী করতে পারেন নাই। এরপর বিএডিসির ডিলারদের কাছে ২০কেজি বীজ চাইলে দেয় ১কেজি। এই অবস্থা চলতে থাকলে এ বছর অনেক জমি অনাবাদী থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ওই কৃষক।
একই কথা জানান ওই গ্রামের কৃষক চান গাজী, ফিরোজ হাওলাদার, নজির মেম্বার, রোশনে আলী চৌকিদার এবং নুরু গাজী।
উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ, কালাইয়া, দাশপাড়া, সূর্যমনি, মদনপুরা, কেশবপুর, নওমালাসহ অপর ইউনিয়নগুলোতেও আমন ধান আবাদে তীব্র বীজ সঙ্কটের খবর জানিয়েছেন কৃষকরা।
এদিকে বীজ ধানের সঙ্কট চললেও মাঠে দেখা মিলছেনা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের।অধিকাংশ কৃষকেদের অভিযোগ, কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা তাদের এই সঙ্কটকালে কোনো দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন না। এছাড়াও অভিযোগ তোলেন বিনামূল্যে সরকারি সার ও বীজ বিতরনে স্বজনপ্রীতি নিয়েও।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বীজ ধানের সঙ্কট রয়েছে স্বীকার করে বলেন, এই সঙ্কটের কারনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। এখানকার কৃষকরা প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বীজতলা তৈরী করে। এটা এখানকার ট্রেন্ড বলতে পারেন, আর শীঘ্রই বিএডিসির ডিলারদেরকে আপদকালীন কিছু বীজ বরাদ্ধ দেয়া হবে। সব মিলিয়ে কোনো জমি অনাবাদী থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা। সার, বীজ বিতরণ এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে নিয়মিত না থাকা প্রসঙ্গে বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়।
এসএস/এমআর