কলাপাড়ায় দুই মানসিক রোগীর পাশে দাঁড়ালেন নারী চিকিৎসক

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় দুই মানসিক রোগীর পাশে দাঁড়ালেন নারী চিকিৎসক
বৃহস্পতিবার ● ২৫ জুন ২০২০


আছিয়ার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হলো খাদ্য সহায়তা।

কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের দুই মানসিক রোগী নিয়ে অসহায় আছিয়া বেগমের পাশে দাঁড়ালো কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক এক মহিলা ডাক্তার। “দুই মানসিক রোগী নিয়ে অসহায় মহিলার” সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বিষয়টি তার নজরে আসে। ২৪ জুন বুধবার দুপুরে সেই আছিয়ার বাড়ীতে এক মাসের খাবার পাঠান তিনি। তিনটি প্রয়োজনীয় খাবার, বস্ত্র ও চিকিৎসার দায়িত্ব তিনি চালিয়ে যাবেন বলেও জানান ওই চিকিৎসক।

জানা যায়, কলপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের মৃত ছবের ফকিরের স্ত্রী আছিয়া বেগম নিজের ভিটে-বাড়ি না থাকায় অন্যের বাড়িতে আশ্রিত থাকেন। তার একমাত্র মেয়ে আছমা ও বোন ফাতেমা বেগম মানসিক রোগী। তাদের দু’জনকেই দেখাভাল করেন আছিয়া বেগম। কিন্তু দুই মানসিক রোগী নিয়ে তিনি অসহায় দিনযাপন করছিলেন। আছিয়া বেগমের অসহায়ত্বের কথা বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায়  প্রকাশিত হয় । পরে এটি একটি ফেসবুক পেইজে শেয়ার হলে বিষয়টি রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়।

এতে বিভিন্ন সংগঠন তার প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তাতে আছিয়া বেগমের ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন হয়নি। কিছুদিন গেলেও পরে তাকে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করেই চলতে হয়। তবে, এবার তার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। আছিয়া বেগম যাতে ভিক্ষা না করে মানসিক দুই রোগী নিয়ে পেট ভরে দু-বেলা খেতে পারে সে ব্যবস্থার জন্য কলাপাড়ার এক মহিলা ডাক্তার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) তার প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের প্রতি মাসের খাবারসহ বস্ত্র ও চিকিৎসার ব্যবস্থা তিনি করবেন বলে সাগরকন্যাকে জানিয়েছেন। তার মতে, মানুষের মৌলিক পাঁচটি চাহিদার তিনটি অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসা চাহিদা আমি পূরণ করার চেষ্টা করবো। আমি যতদিন পারবো দুই মানসিক রোগীসহ আছিয়া বেগমকে সহায়তা করে যাবো।

২৪ জুন বুধবার দুপুরে ডাক্তারের সাহয্যের অর্থ নিয়ে অসহায় আছিয়ার বাড়িতে ছুটে যান কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাকের কলাপাড়া প্রতিনিধি মো. মোহসীন পারভেজ, কলাপাড়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও দৈনিক আমার সংবাদের কলাপাড়া প্রতিনিধ মো. ওমর ফারুক, দৈনিক ভোরের বার্তা করাপাড়া প্রতিনিধি নয়ন অভিরাম গাইন ও সাংবাদিক দিবাকর সরকার। তারা স্থানীয় মুদি দোকান হতে আছিয়া বেগমের পুরো মাসের খাবার বাবদ চালসহ যাবতীয় পণ্য ক্রয় করে তার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসেন।

বাড়ির আঙ্গিনায় এসব পণ্য দেখে আছিয়া বেগম আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তার দু-চোখে খুশির অস্রু দেখতে পাওয়া যায়। আছিয়া বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মত অসহায়কে যে ডাক্তার সাহায্য করেছে আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করি। আল্লাহ যেনো তার দানের হাতকে আরোও বাড়িয়ে দেয়।

এবিষয়ে আছিয়া বেগমকে সহায়তাকারী, পরোপকারী ও মমতাময়ী নারী কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক সেই মহিলা ডাক্তার বলেন,  দুই মানসিক রোগী নিয়ে আছিয়া বেগমের জীবনঘনিষ্ঠ একটি সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে কলাপাড়ার খবর পেইজে তা দেখে আমার চোখে পানি চলে আসে। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই তাদের ভরণ-পোষণ ও চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিব। আছিয়া বেগমের যাতে ভিক্ষা করা না লাগে তার সমস্ত ব্যবস্থা আমি করবো।

এসকেআর/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৪:২৮ ● ৪৯৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ