ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের জায়গা অবৈধ দখলদার কর্তৃক একাধিক বাণিজ্যক ভবন নির্মানের অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক/শিক্ষার্থীগণ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন।
উপজেলার পশ্চিম গৌরীপাড়া গ্রামের বাসীন্দা আবুল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উপজেলার দক্ষিণ বাসুদেবপুর মৌজায় অবস্থিত ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের জায়গা অবৈধ্য দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ করেছেন ফুলবাড়ী সরকারী কলেজ কর্তৃপক্ষ বিগত কয়েকবার। এদিকে আবুল হোসেন তার ক্রয়কৃত জায়গায় মিল চাতাল ও ভবন নির্মাণ করেছেন বলে দাবী করছেন।
ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নজমুল হক বলেন,গত ১৯৬৫ সালের ২৯মে জমির মালিক জমির আলী মোল্লা দক্ষিন বাসুদেব পুর মৌজার ২৪০ নম্বর দাগে ৯৭ শতাংশ জমি সরকারী কলেজকে দান করেন। সেই সময় থেকে বর্গাচাষি নিয়োগ করে কলেজ ভোগ দখল করছিল, কিন্তু পশ্চিম গৌরীপাড়া গ্রামের বাসীন্দা আবুল হোসেন নামে এক ব্যবস্যায়ী সরকারী কলেজের জায়গা দখল করে মিল চাতাল ও বহুতল ভবন নির্মাণ করা শুরু করায় এই বিরোধের সৃষ্টি হয়। অধ্যক্ষ নজমুল হক আরো বলেন কলেজের জায়গা দখল করায়, তিনি আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারের উর্দ্ধতন মহলকে অবহিত করে মামলা দায়ের করেছেন, সেই মামলা থেকে জামিনে এসে আবারো ভবন নির্মাণ করছেন তিনি।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের প্রভাষক ও প্রাক্তন ছাত্র এরশাদ হোসেন বলেন, আবুল হোসেন নামে ওই ব্যাক্তি সরকারী কলেজের জায়গা দখল করে মিল চাতাল ও বহুতল ভবন নির্মাণ করার চেষ্টা করছে। এই ঘটনায় একাধিকবার প্রশাসনের সহযোগীতায় কলেজের জায়গা উদ্ধার করলেও, পরে আবারো জোরপুর্বক ভবন নির্মাণ করছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাসের কারনে কলেজ বন্ধ থাকার সুযোগে, আবুল হোসেন আবারো গোপনে ভবন নির্মাণ করছেন । এই ঘটনায় আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এই জায়গাটি নিয়ে ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের সাথে আবুল হোসেনের দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বিরোধী জায়গায় একাধিক ভবন নির্মাণ করছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেন বলেন, তিনি খরিদ সুত্রে সেই জমিতে মিল চাতাল ও গাছ লাগিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এই জমির মুল মালিক ছিলেন সুবোধ চন্দ্র সাহা, সুবোধ চন্দ্র সাহার নিকট বিনিমিয় সুত্রে জমির আলী ২৪০ দাগে ২০৪ শতক জমিসহ মোট ১৬ একর ৯৫ শতক জমি প্রাপ্ত হন, এরমধ্যে ২৪০ দাগে ২০৪ শতক জমির মধ্যে ৯৭শতক জমি কলেজকে দান করেন এবং বাকি এক একর ১১ শতক জমি মুল মালিক ভোগ দখল করা অবস্থায় জমির আলীর মৃত্যু হলে, জমির আলীর মেয়ে রওশন আরা বেগম ওয়ারীশ সুত্রে গত ১৯৯৩ সালের ১৬মে এক একর জমি তার নিকট বিক্রি করেন।
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে কলেজের জায়গা বেদখল থাকায় অদ্য কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও কলেজের মুল গেটে মানববন্ধন পালন করেন। মানববন্ধনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে বিক্ষোভকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বক্তারা বলেন,অনতবিলম্বে অবৈধ্য স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি কলেজের জায়গা সরকারী কলেজের কাছে ফিরিয়ে হোক।
এএইচসি/এমআর