পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমানকে একটি রাজনৈতিক হত্যা মামলায় আক্রোশ ও হয়রানিমূলক আসামি করার প্রতিবাদে ও মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতির দাবিতে পটুয়াখালীর দশমিনায় মাববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৫ জুন) বেলা ১১ টার দিকে দশমিনায় কর্মরত সাংবাদিক ও সুধীবৃন্দের ব্যানারে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে ওই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এক ঘন্টাব্যাপী ওই মানববন্ধন কর্মসূচি ও সমাবেশে স্থানীয় প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইফনিটি ও সাংবাদিক সমিতির সাংবাদিকেরা, শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তৃতা করেন দশমিনা প্রেসক্লাবের সভাপতি সমকালের সাংবাদিক রিপন কুমার কর্মকার ও সাধারণ সম্পাদক মানবজমিনের সাংবাদিক কামরুল ইসলাম সোহাগ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি যুগান্তরের এইচএম ফোরকান, ইত্তেফাকের মিজানুর রহমান তিতাস, দশমিনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ফয়েজ আহম্মেদ, দশমিনা সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক যায়যায়দিনের মামুন তানভীর , উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাসির পালোয়ান প্রমুখ।
রিপন কুমার কর্মকার বলেন,‘ঈদের আগের দিন ২৪ মে, রোববার করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে করনীয় বিষয় নিয়ে থানার অদূরে বাউফল পৌরসভার ব্যানার স্থাপনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তাপস কুমার দাস নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হন। ওই সময় সাংবাদিক মিজান অন্যান্য সাংবাদিকদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। অথচ ওই হত্যা মামলায় সাংবাদিক মিজানকে আসামি করা হয়েছে।’
এইচএম ফোরকান বলেন,‘বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার সময়ের ভিডিও পুলিশের কাছে সংরক্ষণে আছে। এরপরেও কেন সাংবাদিক মিজানকে রাজনৈতিক হত্যা মামলায় আসামি করা হবে? এটা খুবই দুঃখ ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা।’
কামরুল ইসলাম বলেন, শুধু সাংবাদিক মিজান ভাই নয়, কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন ওই হত্যা মামলায় হয়রানির শিকার না হন। সব নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
ফয়েজ আহম্মেদ বলেন,‘এর আগেও প্রভাবশালী মহলের নানা অনিয়মের বিষয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মিজানকে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, লুট, অস্ত্র, গণধর্ষণসহ ছয়টি মামলায় আসামি করা হয়। সব মামলা মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। এছাড়া তাঁর স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাঁকেও দফায় দফায় বদলি করা হয়েছে। হাইকার্টে রিট করে তাঁকে চাকুরি করতে হচ্ছে। এবার সাংবাদিক মিজানকে আক্রোশ ও হয়রানিমূলক হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বড় ধরনের হুমকি।’
বক্তারা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে এ হত্যা মামলা থেকে সাংবাদিক মিজানকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, ২৪ মে, রোববার দুপুরে বাউফল থানার অদূরে সড়কের ওপর বাউফল পৌরসভার উদ্যোগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সংবলিত ব্যানার স্থাপনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তাপস কুমার দাস নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হন। ওই ঘটনায় ২৫ মে রাতে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েলসহ ৩৫ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত তাপসের বড় ভাই পঙ্কজ চন্দ্র দাস। ওই মামলায় সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে ২০ নম্বর আসামি করা হয়।
এমআর/এমআর