সাগরকন্যা ডেস্ক॥
প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমানকে একটি রাজনৈতিক হত্যা মামলায় আক্রোশ ও হয়রানিমূলক আসামি করার প্রতিবাদে ও মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতির দাবিতে এবং ডেইলী ষ্টারের ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম জুয়েলের ওপর হামলা ও সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করার প্রতিবাদে ঝালকাঠীতে মাববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার বেলা ১১ টার দিকে ঝালকাঠি প্রেসক্লাব ও প্রথম আলো বন্ধুসভার উদ্যোগে উদ্যোগে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে সাংবাদিক মিজানকে আক্রোশ ও হয়রানিমূলক হত্যা মামলায় আসামি করার প্রতিবাদে ও মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতির দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাসষ্টান্ড এলাকায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে স্থানীয় সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নেতারা। গৌরনদী উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ওই কর্মসূচি পালিত হয়।
ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দত্ত, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস সিকদার, জেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত হরি, জেলা প্রেসক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক অলোক সাহা, ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম, প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি আসম মাহমুদুর রহমান, ঝালকাঠি প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি সাকিল রনি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ঈদের আগের দিন ২৪ মে, রোববার করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে করনীয় বিষয় নিয়ে থানার অদূরে বাউফল পৌরসভার ব্যানার স্থাপনকে কেন্দ্র কওে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ তাপস কুমার দাস নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হন। ওই সময় সাংবাদিক মিজান অন্যান্য সাংবাদিকদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। অথচ ওই হত্যা মামলায় সাংবাদিক মিজানকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগেও প্রভাবশালী মহলের নানা অনিয়মের বিষয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মিজানকে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, লুট, অস্ত্র, গণধর্ষণসহ ছয়টি মামলায় আসামি করা হয়। সব মামলা মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে।
এবার সাংবাদিক মিজানকে আক্রোশ ও হয়রানিমূলক হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বড় ধরনের হুমকি। এ ঘটনায় তাঁরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অনতিবিলম্বে এ হত্যা মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে গত ৫ জুন রাজাপুরে এক ক্লিনিক ব্যবসায়ী কর্তৃক ইংরেজী দৈনিক ডেইলী ষ্টারের ঝালকাঠি জেলা প্রতিনধি জহিরুল ইসলাম জুয়েলের ওপর হামলা করে উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করায় নিন্দা জানিয়ে মামলা থেকে সাংবাদিক জুয়েলকে অব্যাহতির দাবি জানান।
গৌরনদী উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা অংশ নেন। এতে একাত্মতা প্রকাশ করেন গৌরনদী রিপোর্টার্স ইফনিটির নেতারা। মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংবাদিকরা। গৌরনদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি খোকন আহম্মেদের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম, গৌরনদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া ও সম্পাদক মনীষ চন্দ্র বিশ্বাস, গৌরনদী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি পলাশ তালুকদার ও সম্পাদক এস.এম মিজান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার সময়ের ভিডিও পুলিশের কাছে সংরক্ষণে আছে। এরপরেও কেন সাংবাদিক মিজানকে রাজনৈতিক হত্যা মামলায় আসামি করা হবে? এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বক্তারা আরও বলেন, শুধু সাংবাদিক মিজান নয়, কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন ওই হত্যা মামলায় হয়রানির শিকার না হন। বক্তারা সব নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এএম/এনবি