আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার তালতলী উপজেলার মৌরুবি গ্রামে জমির দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংষর্ঘে ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের আমতলী ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে সোমবার দিবাগত রাতে।
জানাগেছে, উপজেলার মৌরুবি গ্রামের মৃত্যু মজিদ মুন্সি ৫০ বছর পূর্বে অংসিদ রাখাইনের ২৪ একর জমি নিলামসুত্রে ক্রয় করে। ওই জমি মুজিদ মুন্সির ছেলে খলিলুর রহমান মুন্সি, জামাল মুন্সিসহ ছয় ভাই ভোগদখল করে আসছে। সোমবার দিবাগত রাতে সোবাহানপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গির জোমাদ্দার ৬০-৭০ জন ভাড়াটে লোকজন গিয়ে ওই জমি দখলের জন্য ঘর নির্মাণ করে। এ সময় খলিলুর রহমান মুন্সি ও তার লোকজন ঘর নির্মাণে বাঁধা দেয়। এক পর্যায় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মহিলাসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে রাসেল (৩৫), কামাল মুন্সি (৩৮), জয়নাল মুন্সি (৪৯), জাকিয়া (১৯), শাহিনুর (৪২) , শিমুল (৩৫), নিজাম উদ্দিন (৩০), ফারুক জোমাদ্দার (৫২), মহিবুল্লাহ (২৫), আবদুল হাইকে (৪৫) আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেল, কামাল মুন্সি, জাকিয়া ও শাহিনুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। খবর পেয়ে তালতলী থানা পুলিশ ওই রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, জাহাঙ্গির জোমাদ্দারের নেতৃত্বে লোকজন গিয়ে খলিলুর রহমান মুন্সির দখলীয় জমিতে রাতে জোড়পূর্বক ঘর তোলে। এতে বাঁধা দেয় খলিলুর রহমান মুন্সি ও তার লোকজন। এ সয়ম জাহাঙ্গির জোমাদ্দারের ভাড়াটে লোকজন তাদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে।
খলিলুর রহমান মুন্সি বলেন, আমার বাবা মজিদ মুন্সি ৫০ বছর পূর্বে অংসিদ রাখাইনের জমি নিলাম সুত্রে ক্রয় করে। ওই সময় থেকে আমরা জমি ভোগ দখল করে আসছি। সোমবার রাতে জাহাঙ্গির জোমাদ্দার তার ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোড়পূর্বক ওই জমি দখলের জন্য ঘর নির্মাণ করে। এতে আমরা বাঁধা দিলে মহিলাসহ ১২ জনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
জাহাঙ্গির জোমাদ্দার মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই জমির মুল মালিক আলতাফ মুন্সির কাছ থেকে পাট্রা ও এগ্রিমেন্ট হিসেবে বন্ধক রেখে আমি ভোগদখল করছি। ওই জমিতে সোমবার রাতে ঘর তুলতে গেলে খুলিলুর রহমান মুন্সি ও তার লোকজন আমার পক্ষের ৮ জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে। তিনি আরো বলেন, এ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ বলেন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তালতলী থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামার মিয়া বলেন, জাহাঙ্গির জোমাদ্দারের লোকজন রাতে জমি দখলের জন্য ঘর নির্মাণ করতে যায়। এতে খলিলুর রহমান মুন্সির লোকজন বাঁধা দেয়। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর