আগৈলঝাড়ায় মধ্যবিত্তদের মাঝে খাদ্যাভাবে চাপাকান্না!

প্রথম পাতা » বরিশাল » আগৈলঝাড়ায় মধ্যবিত্তদের মাঝে খাদ্যাভাবে চাপাকান্না!
রবিবার ● ১৭ মে ২০২০


আগৈলঝাড়ায় মধ্যবিত্তদের মাঝে খাদ্যাভাবে চাপাকান্না!

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

করোনা দুর্যোগে সারাদেশের ন্যায় বিপাকে পড়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষজন। অন্যদিকে বিত্তবানরা দিন কাটাচ্ছেন রাজকীয় উচ্চ বিলাসিতায়। আর নি¤œ আয়ের পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে হাতেগোনা সরকারী-বেসরকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে চরম অসুবিধায় থাকলেও লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে না পেরে চাপা কান্না দেখা দিয়েছে আগৈলঝাড়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের মাঝে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, হোটেল চালিয়ে বেশ ভালোই ছিলাম। কিন্তু করোনার প্রার্দুভাব দেখা দেওয়ায় সরকারি নির্দেশে প্রায় আড়াই মাস আগে দোকান বন্ধ হওয়ায় সঞ্চিত অর্থ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এথন সংসার চালাতে প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধ চালাতে হচ্ছে। চক্ষুলজ্জায় কারো কাছে কিছু বলতেও পারছিনা। একই শর্তে আরও একজন জানান, সংসার খরচ কিভাবে জুটবে সে চিন্তায় ঘুম আসেনা। মা-বাবা. স্ত্রী-সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে গোপনে কান্না ছাড়া আর কোন পথ দেখিনা।
উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী উপজেলায় মোট পরিবারের সংখ্যা ৩২ হাজার ৮শ’ ৩৯টি। ওই সকল পরিবারের লোকসংখ্যা ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮শ’ ৫৬ জন। এর অর্ধেকেরও বেশি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় ২৩ মার্চ থেকে চলতি মাস পর্যন্ত আগৈলঝাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের জন্য ১শ’ ১১ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য (চাল) ও ত্রাণ কাজে ব্যবহারের জন্য ৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সরকারের ওই বরাদ্দকৃত চাল উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রশাসন নিযুক্ত সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষক (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৫৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে। বাকি ৫২ মেট্রিক টন চাল গুদামে থাকলেও এখনো বিতরণ করেনি।
কর্মহীন শ্রমজীবি লোকজনের পাশাপাশি দীর্ঘদিন যাবৎ মধ্যবিত্ত পরিবার সদস্যরাও ঘরে আটকা থাকায় চরম খারাপ অবস্থার মধ্যে দিনযাপন করছে। যাদের সাহায্যের দরকার অথচ তারা কারো কাছে হাত পাততে পারছেনা ওই সকল পরিবারগুলো বর্তমানে খাদ্য সংকট সহ চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
জেলা ও পৌর এলাকায় সরকারে খোলা বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে (ওএমএস) চাল বিক্রির সুবিধা থাকলেও উপজেলা পর্যায়ে ডিলারের মাধ্যমে তা খোলা বাজারে সরকারের ওই চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত না থাকায় চরম বিপাক পরেছে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

জাতির অস্তিত্বের এই সংকটকালে তাই জনপ্রতিনিধিদের প্রতি সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক। কারণ জনগণ তাদের ভোট দেয় নিজেদের সুখে দু:খে পাশে পাবার প্রত্যাশায়। তাই জনপ্রতিনিধিদের উচিত জনগণের পাশে থাকা। ভোটের সময় সেবার কথা বলে নির্বাচিত হলেও এখন বিপদের দিনে বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধি পাশে নেই। জাতির অস্তিত্বের এই সংকটকালে বরিশাল- ১ আসনের এমপি ঢাকায় অবস্থান করলেও নিয়মিত দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে খোঁজখবর রাখছেন এবং এলাকায় দরিদ্র জনগণের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করাচ্ছেন। তবে এলাকার বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি জীবনবাজি রেখে দিনরাত জনসাধারণের পাশে থেকে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এএলএস/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৬:০০ ● ২৯৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ