দশমিনায় বাবা’র ভিক্ষার টাকায় ছেলের লেখাপড়া!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » দশমিনায় বাবা’র ভিক্ষার টাকায় ছেলের লেখাপড়া!
শনিবার ● ৯ মে ২০২০


ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশাকে বেছে নেওয়া বৃদ্ধ আলতাব খাঁ।

সঞ্জয় ব্যানার্জী, দশমিনা সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দশমিনায় বাবা’র ভিক্ষাবৃত্তিতে পুত্রের লেখাপড়াসহ তিন জনের জীবন সংসার চলছে অতিকষ্টে। অন্যের সাথে কাজ করতে না পেরে ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশাকে এখন বেছে নিয়েছেন তিনি। বয়সের ভারে ন্যুব্জ, তবুও ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া তিনি যে অনুপায়! উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের মৃত ইসমাইল খাঁ’র ছেলে মোঃ আলতাব খাঁ (৬৫)। শনিবার ভিক্ষাবৃত্তির সময় দেখা মিলে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গছানী বাজারে। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, ভিক্ষা ছাড়া কোন উপায় নাই তাঁর, বাবার বাড়িভিটা ছাড়া জমাজমি ছিলনা। নিজেও কিছু করতে পরেননি। এ বয়সে ২মেয়ে বিয়ে দেওয়া ১ছেলে আবু বক্করকে কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পড়াতে অনেক টাকার দরকার। কোথায় পাবেন সে অর্থ!। ছেলে পাস করে চাকরিতে গেলে ভিক্ষা করা লাগবে না- এমন আশাবাদ এই অতিশীপর বৃদ্ধের।  এভাবেই কথাগুলো জানালেন জীবন যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে পড়া আলতাব খাঁ। এখন আর ঠিকমত হাটতেও পারেন না। চোখেও দেখে কম। শরীরের চামড়া শুকিয়ে গেছে। হাড্ডিগুলো অনেকটা দৃশ্যমান। চোখের পাতায় ক্লান্তির পরশ আচ্ছন্ন করে থাকলেও জীবন যুদ্ধে অবিচল তিনি। জীবন সংগ্রামে কর্মঠ পুরুষ ছিলেন। অন্যের সাথে কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু অবশেষে বিধির লীলায় হার মানতে বাধ্য হয়েছেন। অন্যের সাথে কাজ করার জীবন ছেড়ে হয়েছেন ভিক্ষুক।
বৃদ্ধ আলতাব খাঁ বলেন, ‘ভিক্ষা কইর‌্যা কোনদিন  ৪সেরা চাউল, কোনদিন ২সের চাউল, কোনদিন পাইনা। দুইডা মাইয়া, একটা পোলা আছে, মাইয়াগোরে বিয়া দিয়া দিছি। আর পোলাডা কালইয়া মোল্লাগো কলেজে আইয়ে পড়ে। আমার ভিক্ষায় চলছে লেহা পড়ার খরছ আর আমাগো খাওয়া পড়া। পোলার চাকরি অইলে আমার আর ভিক্ষা করা লাগবে না, এহন আমি ভিক্ষা করি। জমিজামা নাই, বাড়ির মধ্যে ৪কড়া জায়গা আছে। আগে আমি দূরে দূরে যাইয়া মানুষের লগে কাজ করতাম, এহনতো আর পারি না। কি আর করমু, খাওনতো লাগবে। হ্যাইয়ার লইগ্যা ভিক্ষা করি।’ এভাবেই বর্ণনা দেন বয়োবৃদ্ধ আলতাব খাঁ। তিনি তার ছেলের জন্য দোয়া ও সহযোগিতা চান।

এসবি/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ১২:২৯:০২ ● ৭১৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ