গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আদালত বা প্রশাসনিক আদেশ ছাড়াই গোপালগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৭ কর্মচারীর বেতন বিগত ৬ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমনের মধ্যে এসব কর্মচারীরা বেতনভাতা না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসব কর্মচারীরা দ্রুত তাদের বেতন ভাতা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ আজাদুর রহমান জানান, বিগত ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করা হয়। সে সময় জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় গোপালগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জেলা প্রশাসনের ৭ কর্মচারী যোগদান করেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ৬৮৩৬/২০০৮ নং রীট পিটিশনের রায়ে ডিসি অফিসের ৭ কর্মচারীদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেনকে জারিকারক ও অন্য ৬ জনকে বেঞ্চ সহকারী হিসেবে গোপালগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মীয়করণের আদেশ প্রদান করে।
পরবর্তীতে সরকার পক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। এটি একটি চলমান আইনী প্রক্রিয়া। বিগত ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭ কর্মচারীর বেতর ভাতা গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিয়ে আসছিলেন। জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা মৌখিক নির্দেশে কোন প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়াই গত অক্টোবর মাস থেকে জারিকারক ও নভেম্বর মাসে ৬ বেঞ্চ সহকারীর বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন।
৭ কর্মচারীর বেতন ভাতা বন্ধের আদালত বা প্রশাসনিক কোন আদেশ নেই। অজ্ঞাত কারণেই এটি করা হয়েছে বলে ওই বেঞ্চ সহকারী জানান।
তিনি আরো জানান, তাদের বেতন ভাতা চালুর জন্য গত ২০ জানুয়ারী ও ৮ এপ্রিল গোপালগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু তারপরও তারা তাদের বেতন ভাতা এখনো পাননি।
ওই আদালতের জারিকারক দেলোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। করোনা সংক্রমণের মধ্যে এ সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। কেউ টাকা ধার দিচ্ছে না। দোকান থেকে বাকীতে ভোগ্যপন্য কিনতে পারছি না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের এ কান্তিকালে সকল সরকারি, বেসরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় এনে আমাদের বেতন ভাতা দ্রুত প্রদানের জন্য মমতাময়ী জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার সময় আমাদের ১১ জন জনবল, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সাপোর্ট দিয়ে আমরা চীফ জুজিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে সহযোগিতা করেছিলাম। ২০১৪ সালের মধ্যে তাদের সব নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জন ডিসি অফিসে ফিরে এসেছেন। ৭ জন এখানো ফিরে আসেনি। তাদের পদ শূন্য হয়নি। তাই নতুন লোক নিয়োগ দিতে পারছিনা। ডিসি অফিসের কাজের অসুবিধা হচ্ছে। তারা ডিসি অফিসে যোগ দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ফিরে না আসলে তাদের পেনশন নিয়েও জটিলতা তৈরী হবে।
এইচবি/এমআর