আমতলীতে একই পরিবারের তিনজনসহ আক্রান্ত ৭
প্রথম পাতা »
বরগুনা »
আমতলীতে একই পরিবারের তিনজনসহ আক্রান্ত ৭
আমতলী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলীতে একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও সাত বছরের শিশুপুত্র প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। একই পরিবারে তিনজন আক্রান্ত হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আক্রান্তরা বাড়ীতে আলাদা আলাদা আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শনিবার রাতে করোনাভাইরাসে ঔষধ কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজারের স্ত্রী ও শিশুপুত্র আক্রান্তের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ম্যানেজার আক্রান্ত হওয়ার তিনদিন পর স্ত্রী ও শিশুপুত্র আক্রান্ত হয়েছেন। ম্যানেজার আক্রান্ত হওয়ার পর গত বুধবার থেকে ওই বাড়ি লকডাউন করা আছে। ইউএনও মনিরা পারভীন তাদের সার্বিক দেখাশুনা করছেন। এনিয়ে আমতলীতে ৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
জানা গেছে, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালের আমতলী এরিয়া ম্যানেজার গত ১০ এপ্রিল থেকে জ্বর ও হালকা কাশি নিয়ে পৌরসভার আমতলী বন্দর সরকারী প্রাইমারী স্কুল সংলগ্ন শহীদুল ইসলাম তালুকদারের ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। তার শরীরের অবস্থা খারাপ দেখে পরিবারের সদস্যরা গত সোমবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহাদাত হোসেনে ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে আসেন। পরে তিনি তাকে করোরা ভাইরাসের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। ওইদিনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করেন এবং ঢাকা রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পাঠিয়ে দেয়। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তার নমুনা প্রতিবেদন আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, তিনি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ঘটনার পর থেকেই তিনি বাসার আইসোলেশনে আছেন। গত বৃহস্পতিবার তার পরিবার স্ত্রী, দুই শিশুপুত্রের নমনা সংগ্রহ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই নমুনা তারা ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তাদের নমুনা প্রতিবেদন আমতলী উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আসে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, ম্যানেজারের স্ত্রী ও সাত বছরের শিশুপুত্র প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ খবরে ওই পরিবারসহ এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ওইরাতেই ইউএনও মনিরা পারভীন তার বাড়ী পরিদর্শন করেন। আমতলী উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সাতজনের মধ্যে গত ৯ এপ্রিল আওয়ামীলীগ নেতা জিএম দেলওয়ার হোসেন মৃত্যু বরণ করেন। আওয়ামীলীগ নেতার মৃত্যুর পর থেকে বরগুনা জেলা প্রশাসক আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেন। ওই সময় থেকেই আমতলী উপজেলা লকডাউন অবস্থায় আছে। ঔষধ কোম্পানী ম্যানেজারের গ্রামের বাড়ী মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার সাতভাগিয়া গ্রামে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ঔষধ কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার মুঠোফোনে কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমার স্ত্রী ও ছোট ছেলের জ্বর ও কাশি আছে। তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস পজেটিভ। এখন আমার পরিবারের কি হবে? কে আমাকে গরম পানি করে দিবে? আমার স্ত্রী ও সাত বছরের শিশুপুত্রের কি হবে? আপনারা আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া কবরেন। তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই বাসার আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ঔষধ কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজারের পরিবারে তার স্ত্রী ও শিশুপুত্র করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। তাদের বাসার আসইসোলেশনে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, পূর্বেই ম্যানেজারের বাড়ী লকডাউন করা হয়েছে। তাদের বাসায় আইসোলেশনে রেখেই চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এইচএকে/এনবি
বাংলাদেশ সময়: ৯:০৭:৩১ ●
৭৯৬ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)