অতুল পাল, বাউফল সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর বাউফলে করোনা রোগীদের হাসপাতালে স্থানন্তরের দাবিতে গাছ, টিন ও কাঠের গুড়ি ফেলে কালাইয়া-ভোলা সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসি। আজ শনিবার বেলা ১১ টার সময় উপজেলার কালাইয়া বন্দরের ইদ্রিছ মোল্লা ডিগ্রি কলেজ গেট এলাকায় এঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ এসে এলাকাবাসিকে বুঝিয়ে অবরোধ উঠিয়ে ফেলে এবং রাস্তায় দেয়া গাছপালা তুলে নেয়। এদিকে বাউফলের কালিশুরী বাজারে একজনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় ওই বাজারের তিনটি ক্লিনিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
এলাকাবাসি জানায়, গত ২০ এপ্রিল একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে নারায়ণগঞ্জ থেকে গোপণে ৬ জনের একটি দল বাউফলের পূর্ব কালাইয়া এলাকায় আসেন। ওই সময় এলাকাবাসি তাদেরকে গ্রামে ঢুকতে দেয়নি। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান এসএম ফয়সাল আহমেদ মনির হোসেন মোল্লা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহার প্রচেষ্টায় তাদেরকে স্থানীয় ইদ্রিছ মোল্লা ডিগ্রি কলেজের একটি ভবনে কয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। ২২ এপ্রিল তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। ২৪ এপ্রিল তাদের মধ্যে ৫ জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এরপর তাদেরকে ওই কলেজেই আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এলাকাবাসির অভিযোগ, আক্রান্তদের দুই তিনজন বাহিরে বের হচ্ছে এবং বাজারে গিয়ে চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছে। এরফলে কালাইয়ায় করোনার জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই ওই রোগীদের হাসপাতালে স্থানন্তর করার দাবিতে তারা রাস্তা অবরোধ করেছেন। রাস্তা অবরোধের ফলে প্রায় তিন ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরামর্শে স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করলেও এলাকাবাসি অবরোধ তুলে নেয়নি। পরে বেলা দেড়টার দিকে বাউফল থানার পুলিশ এসে রোগী স্থানন্তরের আশ্বাস দিলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেয়।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. এস এম সায়েম জানান, উপজেলার কালিশুরী বাজারে এক চায়ের দোকানদার এক সপ্তাহ আগে জ্বর ও সর্দি নিয়ে স্থানীয় দুটি ক্লিনিক ও একটি বেসরকারি সংস্থার চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে ভাল না হওয়ায় ২২ এপ্রিল বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানে তার করোনা ধরা পড়ে। বর্তমানে সে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এনিয়ে বাউফলে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ছয় জনে উন্নীত হলো। কালিশুরীতে শনাক্তকৃত করোনা রোগী ওই বাজারের বেসরকারি সংস্থা স্লোবের চিকিৎসা কেন্দ্র, নিউ লাইফ ক্লিনিক এবং মাজেদা ক্লিনিকে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা নেয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ওই তিনটি ক্লিনিককে লকডাউন করে দিয়েছেন।
এপি/এনবি