সাগরকন্যা ডেস্ক ॥
মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি মাদকাসক্তদের চিকিৎসারও উদোগ নিয়েছে। সরকার প্রধানের নির্দেশে ইতিমধ্যে রাজধানীসহ দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে হাসপাতাল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় মাদকাসক্তদের জন্য হাসপাতাল করা হবে। ওই লক্ষ্যে চিকিৎসক ও নার্স বাড়ানোর উদ্যোগও নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে বেসরকারি পর্যায়ে যে মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলো রয়েছে সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ওসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। কোনো কোনো নিরাময় কেন্দ্র শুধুমাত্র টাকা কামানোর জন্যই কার্যক্রম চালাচ্ছে। ফলে ওসব প্রতিষ্ঠান মাদকসেবীদের কতোটা ভালো করতে চায় তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ওই কারণে সরকারের তরফ থেকে সারা দেশে মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ১২৪ শয্যার একটি হাসপাতালে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা দেয়া হয়। ওই নিরাময় কেন্দ্রটিকে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মাদকাসক্তদের চিকিৎসার পাশাপাশি সেখান থেকে প্রশিণ দিয়ে গড়ে তোলা হবে বিশেষায়িত চিকিৎসক ও নার্স। পরবর্তীতে ওই চিকিৎসক ও নার্সদের দেশের বিভিন্ন বিভাগের মাদক নিরাময় হাসপাতালগুলোতে নিয়োগ দেয়া হবে। ইতিমধ্যে তেজগাঁওয়ে ২৫০ শয্যার মাদক নিরাময় কেন্দ্র করার জন্য ১৮০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তুলতে ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। ৭টি বিভাগে হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। রাজধানীসহ ৮ বিভাগে ৮টি মাদক নিরাময় হাসপাতাল বা পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তুলতে ব্যয় হবে ৯৩০ কোটি টাকা। আর বিভাগীয় শহর ছাড়া জেলা শহরেও নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি জেলায় ৫০ শয্যার হাসপাতাল করা হবে। সেটিকেই নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
এদিকে, গত ২০ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিদর্শনকালে ওই মন্ত্রণালয়ের অধীন পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সব সংস্থার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘসময় বৈঠক করেন। আর ওই বৈঠকের বেশির ভাগ জুড়েই ছিল মাদকের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। মাদকের বিস্তার রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। আর ওই নির্দেশনা অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কাজ করা হচ্ছে। ওই লক্ষ্যে সারা দেশে মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।
অন্যদিকে, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আতিকুল হক জানান, মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র করার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রথমে ঢাকায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় কেন্দ্র করা হচ্ছে। তারপর বিভাগীয় শহরে প্রতিষ্ঠা করা হবে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় গড়ে উঠবে নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র। সেক্ষেত্রে প্রথমে বৃহত্তর জেলাগুলোতে মাদক নিরমায় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। পরে পর্যায়ক্রমে অন্য জেলাগুলোতে করা হবে।
এফএন/কেএস